ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির চাপের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে ব্লিনকেন

ইসরাইলের সামরিক অভিযানে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজার বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।

ব্রিটেন বুধবার গাজা উপত্যকায় খাদ্য সহায়তা সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার আগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং নতুন করে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেয়া শুরু করেছেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জর্ডানের সহায়তায় দুই হাজার টন খাবার গাজায় ঢুকেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় তা বিতরণ করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজায় ত্রাণের প্রবাহ অব্যাহত রাখা সেখানকার দুর্ভোগের অবসান ঘটানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর একই কারণেই ডব্লিউএফপির সর্বশেষ ত্রাণ বিতরণ এত গুরুত্বপূর্ণ।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন চলতি সপ্তাহে সৌদি আরব ও মিশরে বৈঠক করবেন। তার এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য থাকবে, গাজায় নতুন করে যুদ্ধ বিরতি, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় ত্রাণ পেতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা এবং যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় প্রশাসন, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন সংকট মোকাবেলার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার দিকে মনোনিবেশ করা।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রাফায় ইসরাইলের আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গাজা-মিশর সীমান্তে অবস্থিত এই শহরটিতে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে আশ্রয় নিয়েছে।

যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হলে রাফা থেকে সরে যাবার কোন নিরাপদ জায়গা আর গাজার মানুষের জন্য অবশিষ্ট থাকবে না। যা কিনা একটি সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয়ের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন আগামী সপ্তাহে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে আমন্ত্রণ জানাবেন। রাফায় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়ে পেন্টাগনে আলোচনাই এর উদ্দেশ্য বলে জানা যায়। জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা এবং গাজায় পৌঁছানোর জন্য আরো মানবিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও আলোচ্যসূচীতে থাকবে বলে বলা হয়েছে।

তাছাড়া হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা, ওয়াশিংটনে ইসরাইলের জ্যেষ্ঠ সামরিক বাহিনী, গোয়েন্দা ও মানবিক সহায়তা কর্মকর্তাদেরও আলাদাভাবে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বলেছেন, আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে তারা আশা করছেন।

মঙ্গলবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রও ইসরাইল ও হামাসের নতুন করে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে সতর্ক আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

হামাসের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাবিত চুক্তিতে “সব শহর ও জনবহুল এলাকা” থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কোন সমাধান আসেনি। আলোচনায় কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেও বলে হামাসের কর্মকর্তারাদের মনে করছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স, এপি এবং এ এফপি থেকে নেওয়া হয়েছে।