পাকিস্তান সোমবার নিশ্চিত করেছে, তাদের সামরিক বাহিনী “গোয়েন্দা তথ্যের” উপর ভিত্তি করে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে। আন্তঃসীমান্ত অভিযানে শত শত বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে হত্যার জন্য দায়ী “সন্ত্রাসীদের” শাস্তি দেয়ার জন্য এই হামলা চালানো হয় বলে পাকিস্তান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেহরিক-এ-তালিবান বা টিটিপি’র সাথে সম্পৃক্ত পলাতক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়।
আফগানিস্তানের নিরাপদ আশ্রয় থেকে কাজ করে টিটিপি, যাদের বিশ্বব্যাপী একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের তালিবান সরকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা ও খোস্ত সীমান্ত প্রদেশে ভোরের আগে চালানো হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, এতে আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
নিহতদের পরিচয় নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “আমরা বারবার আফগান কর্তৃপক্ষকে দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছি যাতে আফগান মাটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত না হয়। আমরা টিটিপিকে নিরাপদ আশ্রয় দিতে অস্বীকার করতে এবং তাদের নেতৃত্বকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছি।”
তালিবানের প্রতি আহবান
কাবুলের ‘ক্ষমতাসীনদের মধ্যে কেউ কেউ’ টিটিপিকে সক্রিয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করছে বলে ইসলামাবাদের অভিযোগ বিবৃতিতে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে তালিবানকে “বিদেশি সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বন করার নীতি পুনর্বিবেচনা করতে” এবং “পাকিস্তানের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়ার” আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার গোলযোগপূর্ণ উত্তর ওয়াজিরিস্তান সীমান্তবর্তী জেলায় পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি অভিযানে দুজন অফিসারসহ সাতজন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে আন্তঃসীমান্ত সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এই বেপরোয়া পদক্ষেপকে আফগানিস্তানের ভূখণ্ডের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করছে।”
বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি তার সরকারের আনুষ্ঠানিক নাম ব্যবহার করেছেন, যা এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
তালিবান পাকিস্তান বা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে জঙ্গি গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দিচ্ছে - মুজাহিদ এমন অভিযোগ আবারও অস্বীকার করেন।