কথিত সন্ত্রাসী হুমকির ব্যাপারে ইমরান খানের সঙ্গে জেলে দেখা করার উপর নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সমর্থকরা পেশোয়ারে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ দেশের জাতীয় নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতিকৃতি উঁচু করে ধরে।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের কারা কর্তৃপক্ষ একটি “নিরাপত্তাজণিত সতর্কতা”র জন্য দেশটির রাজনৈতিক দল এবং আইনি পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে তীব্র তিরস্কারের মুখোমুখি হয়েছে। এই “নিরাপত্তাজণিত সতর্কতা”র অধীনে দুই সপ্তাহের জন্য কারাবন্দী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে দর্শনার্থীদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৭১ বছর বয়সী সাবেক এই পাকিস্তানি নেতা রাজধানী ইসলামাবাদ সংলগ্ন গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডিতে দীর্ঘ মেয়াদি জেল খাটছেন। ইমরান খানকে দুর্নীতি, ক্ষমতায় থাকাকালীন রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস, এবং গত মাসের জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে একটি জাল বিবাহের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইমরান খান অভিযোগগুলোকে তার রাজনৈতিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে করা বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) মঙ্গলবারের আকস্মিক ‘ঢালাও নিষেধাজ্ঞা’কে বেআইনি ও অসাংবিধানিক বলে নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এটি অপসারণের দাবি জানিয়েছে।

পাঞ্জাব প্রদেশের কারা মহাপরিদর্শকের একটি লিখিত নির্দেশনা মঙ্গলবার কারা কমপ্লেক্সের মধ্যে জনসাধারণের সাক্ষাৎ,সভা এবং গণমাধ্যম দ্বারা সাক্ষাৎকারের ওপর দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ক্রিকেট হিরো থেকে প্রধানমন্ত্রী বনে যাওয়া ইমরান খান ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে এই পদ থেকে বহিষ্কৃত হন এবং তারপর থেকে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।তিনি তার ওপর আরোপিত অভিযোগগুলোর কথা অস্বীকার করেন এবং তার বিচার ও অন্যান্য নাগরিক ও ফৌজদারি অভিযোগের পেছনে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেন।সেনাবাহিনী দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিভক্ত ম্যান্ডেট দেয়া হয়। ৩৩৬ আসনের জাতীয় পরিষদ বা সংসদের নিম্নকক্ষে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও এককভাবে সরকার গঠনের জন্য এটি যথেষ্ট ছিল না।

এর ফলে পরিবার নিয়ন্ত্রিত ঐতিহ্যবাহী দুই ক্ষমতাসীন দল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ বা পিএমএল-এন এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)একটি জোট সরকার গঠনে উৎসাহিত হয়। এর ফলে শেহবাজ শরীফ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরতে সক্ষম হন।

নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে।যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশে ও বিদেশে সরকারের সমালোচকরা এই নির্বাচনের স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানান।