হাইতির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ সংগ্রাম করছেন। তিনি এখন দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। অপরাধী চক্রের হামলায় সে দেশের প্রধান বিমানবন্দর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সাম্প্রতিক কয়েক দিনে ৪ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
হেনরি বুধবার দুপুর পর্যন্ত পুয়ের্তো রিকোতে ছিলেন। প্রতিবেশী দেশ ডমিনিকান রিপাবলিকে অবতরণে তাঁকে বাধা দেওয়ার একদিন পর সেখানে তিনি হাজির হন। ডমিনিকান রিপাবলিকের কর্মকর্তারা হাইতি থেকে আসা-যাওয়ার আকাশ পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।
আপাতত দেশের বাইরে আটকে থাকা হেনরি অচলাবস্থার মুখে পড়েছেন কেননা কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন অথবা সেদিকেই তাকে ঠেলে দিচ্ছেন।
৭৪ বছর বয়সী হেনরি একজন নিউরো-সার্জেন। ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সেখানে কাজ করেছেন। ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে তিনি হাইতির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এই সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাঁ-বারট্রান্ড অ্যারিস্টাইডের বিরোধী এক আন্দোলনের নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
অ্যারিস্টাইডের ক্ষমতাচ্যুতির পর হেনরি যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যপুষ্ট এক পরিষদের সদস্য হন। এই পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনে সাহায্য করেছিল।
২০০৬ সালের জুন মাসে হাইতির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে মনোনীত হন তিনি এবং পরে এই সংস্থার তিনি চিফ অফ স্টাফ হন।
২০১৫ সালে তাঁকে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক সম্প্রদায়ের মন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল এবং হাইতির নিরাপত্তা ও স্বরাষ্ট্র নীতি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
কয়েক মাস পর, তিনি সমাজকল্যাণ ও শ্রম মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন, তবে ইনাইট দল ছাড়ার পর তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়।
তার পদত্যাগের দাবি করেছে যারা তাদের মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত একাধিক চক্র। তা ছাড়া হাইতিবাসীরা ক্ষুব্ধ কারণ প্রায় এক দশক সে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তারা আরও উল্লেখ করেছে, হেনরি কখনও নির্বাচিত হননি এবং তিনি মানুষের প্রতিনিধি নন।
কনক্যানন বলেছেন, “হাইতির স্বীকৃত পদ্ধতি মেনে তাঁকে নিয়োগ করা হয়নি। আদালত মূলত তাঁকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।”
দক্ষিণ আমেরিকার গুয়ানায় ক্যারিকম নামে পরিচিত আঞ্চলিক বাণিজ্য সংস্থা আয়োজিত চার দিনের এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত মাসে হেনরি হাইতি ত্যাগ করেছিলেন। সেখানেই হাইতির ক্রমবর্ধমান সংকট নিয়ে রুদ্ধদ্বার আলোচনা হয়েছিল।
ক্যারিবিয়ান নেতারা বৃহস্পতিবার বিকালে হেনরির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পদত্যাগ-সহ কয়েকটি বিকল্প দিয়েছেন তাঁকে। হেনরি পদত্যাগের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক আঞ্চলিক কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
এদিকে, গ্রেনাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হেনরি কর্মকর্তাদের বলেছেন যে, তাঁর পরিকল্পনা হল হাইতিতে ফিরে যাওয়া।
হাইতি ও হেনরির সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার বিকালে এক জরুরি বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
ওই বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদাররা হেনরিকে ছাড় দিতে বলছে।