বুধবার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, সুদানে প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেলদের মধ্যে প্রায় ১১ মাসের যুদ্ধ “বিশ্বের বৃহত্তম অনাহার সংকটের ঝুঁকি তৈরি করছে” বলে সতর্ক করে দিয়েছে।
সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে চলা যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। দেশটির অবকাঠামো ধ্বংসের সাথে সাথে অর্থনীতিও পঙ্গু হয়ে গেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতি সংকটে পরিণত হয়েছে এটি। সংঘাতের পর দেশটির প্রায় ৮০ লাখেরও বেশিমানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া সংঘাতের আগে জোরপূর্বক ২০ লক্ষ মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
ডব্লিউএফপি-র নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন এবং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা এখন ঝুঁকির মুখে।
তিনি সুদানের বিশাল পশ্চিমাঞ্চলের কথা উল্লেখ করে বলেন, “বিশ বছর আগে দারফুর এলাকা বৃহত্তম অনাহার সংকট ছিল এবং বিশ্ব তখন সেটাতে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু আজ সুদানের জনগণকে ভুলে গিয়েছে সবাই।”
"বিশ বছর আগে, দারফুর বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষুধা সংকট ছিল এবং বিশ্ব প্রতিক্রিয়া জানাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল," তিনি বলেছিলেন।
সাবেক স্বৈরশাসক ওমর আল-বশির ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে দারফুরে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের দমনে আরএসএফকে ব্যবহার করেন।
বর্তমান যুদ্ধে , আবাসিক এলাকায় বেসামরিক লোকজনকে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণে বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে আরএসএফ এবং সেনাবাহিনী উভয়ের বিরুদ্ধেই।
ডব্লিউএফপি বর্তমানে যে ৯০ শতাংশ মানুষ “অতি মাত্রায় অনাহারে” ভুগছে তাদের কাছে পোঁছাতে পারছে না। সুদানের মাত্র পাঁচ শতাংশ মানুষ “দিনে এক বেলা খাবার জোগাড় করতে পারে।”
দক্ষিণ সুদানের জনাকীর্ণ ট্রানজিট ক্যাম্পগুলোতে সুদান থেকে ৬ লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা বলছে, সেখানে "পরিবারগুলো ক্ষুধার্ত অবস্থায় পৌঁছেছে এবং তারা ততোধিক ক্ষুধার্ত অবস্থায় রয়েছে।"
সীমান্ত অতিক্রমকারী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।
সমস্ত সুদান জুড়ে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তার মুখোমুখি হচ্ছে। এদের মধ্যে ৫০ লাখ বিপর্যয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।