জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহার করে তৈরি পণ্য নিষিদ্ধ করতে ইইউ’র চুক্তি

চীনের জিনজিয়াং-এ উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উরুমকির উপকণ্ঠে একটি ভক্সওয়াগন প্ল্যান্ট দেখা যাচ্ছে। ২২ এপ্রিল, ২০২১। ফাইল ছবি।

মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোরপূর্বক শ্রম থেকে তৈরি পণ্য নিষিদ্ধ করার এক ধাপ কাছাকাছি চলে গেছে। আলোচকরা একটি আইনের ব্যাপারে চুক্তিতে পৌঁছেছে। আইনটির সমর্থকরা আশা করছে, এটি উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক শ্রমের মাধ্যমে তৈরি চীনা পণ্যের আমদানিকে বাধাগ্রস্ত করতে সহায়তা করবে।

চুক্তির খসড়াতে নির্দিষ্টভাবে চীনের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সকল স্থানে জোরপূর্বক শ্রম দ্বারা তৈরি পণ্যের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ কারাগারে বন্দী রয়েছে। সেখানকার নারীরা জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ ও জোরপূর্বক শ্রমসহ ব্যাপক নির্যাতনের মুখোমুখি হচ্ছে।

আন্তুর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে ৩৩ লাখ শিশুসহ প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ জোরপূর্বক শ্রমে নিয়োজিত।

নতুন আইন অনুযায়ী, ইইউর বাইরে কোনো কোম্পানি সাপ্লাই চেইনে জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহার করার সন্দেহ দেখা দিলে ইউরোপীয় কমিশনকে অবশ্যই তদন্ত শুরু করতে হবে।

এদিকে ইইউর ২৭টি সদস্য দেশ ব্লকের অভ্যন্তরে জোরপূর্বক শ্রমের সন্দেহের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যদি জোরপূর্বক শ্রমের ব্যবহার প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রাসঙ্গিক পণ্যগুলো সীমান্তে বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে এবং ইউরোপীয় বাজার ও অনলাইন মার্কেট প্লেস থেকে প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

যেকোনো লঙ্ঘনের জন্য সংস্থাগুলোকে জরিমানা করা যেতে পারে। যদিও আইনে ন্যূনতম বা সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়নি, কর্মকর্তারা বলেছেন, জরিমানার পরিমাণ এমন হওয়া উচিত, তা যেন প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

যদি কোনো কোম্পানি তাদের সাপ্লাই চেইন থেকে জোরপূর্বক শ্রম বাদ দেয়, তাহলে নিষিদ্ধ পণ্যগুলো ইউরোপের বাজারে ফিরে আসতে পারে।

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ঐ অঞ্চল থেকে সমস্ত আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল, যদি না জিনজিয়াং-এর সংস্থাগুলো প্রমাণ করতে পারে যে, তাদের উৎপাদনে জোরপূর্বক শ্রম অন্তর্ভুক্ত নেই।

২০২২ সালে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত আইনটি ইইউর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র এবং পার্লামেন্টে গ্রহণের পর সেটি আনুষ্ঠানিক রূপ নেবে।