হাজার হাজার পদ বিলুপ্ত করে নিজেদের ঢেলে সাজাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী

ফাইল ছবি—ওয়াশিংটনে অবস্থিত পেন্টাগন ভবন (২৭ মার্চ, ২০০৮)

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী তাদের সদস্যসংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার কমাচ্ছে, যা মোট সেনা সংখ্যার পাঁচ শতাংশ। এই পুনর্গঠনের উদ্দেশ্য পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে আরও ভালো করে লড়ার সক্ষমতা অর্জন। এ মুহূর্তে সেনাবাহিনীতে যথেষ্ট পরিমাণ সেনা নিয়োগ না দেওয়ায় সব পদ পূরণ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইতোমধ্যে শূন্য আছে, এমন পদগুলোই মূলত বিলুপ্ত করা হবে। বস্তুত কোনো সেনা চাকরি হারাবেন না। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় অসংখ্য সন্ত্রাসবিরোধী পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল, যা আজ আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেনাবাহিনীর স্পেশাল অপারেশন ফোর্স থেকেই প্রায় তিন হাজার পদ কমানো হবে।

একইসঙ্গে, এই পরিকল্পনার আওতায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে সাড়ে সাত হাজার সেনা নিয়োগ দেওয়া হবে। এগুলোর মধ্যে আছে বিমান-হামলা প্রতিরক্ষা ও ড্রোন-বিধ্বংসী ইউনিট এবং বিশ্বজুড়ে পরিবর্ধিত সাইবার, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং দূর-পাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম পাঁচটি নতুন টাস্ক ফোর্স।

সেনাবাহিনীর সেক্রেটারি ক্রিসটিন ওরমুথ বলছেন, তিনি ও সেনাবাহিনী প্রধান র‍্যান্ডি জর্জ একসঙ্গে কাজ করে যেখানে খালি পদ ও বাড়তি লোকবল আছে, সে বিষয়গুলোর সমন্বয় করেছেন।

জর্জ জানান, সেনাবাহিনীর নেতারা অনেক বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করেছেন কোথায় লোকবল কমাতে হবে।

সেনাবাহিনীর এই সার্বিক সংস্কার পরিকল্পনা এসেছে দুই দশকের ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের পর। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনা ব্রিগেড পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় এ সময় সেনাবাহিনীকে খুব দ্রুত ও নাটকীয়ভাবে বাহিনীর আকার সম্প্রসারণ করতে হয়েছে। এর মধ্যে ছিল আল-কায়দা, তালিবান ও ইসলামিক স্টেট সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়তে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযানের আয়োজন।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনী এখন চীন ও রাশিয়ার মতো বৈশ্বিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং ইরান ও উত্তর কোরিয়ার হুমকির মোকাবিলার দিকে নজর দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ বিমান-হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন আকাশ ও নৌ ড্রোনের ব্যবহার ও মোকাবিলার গুরুত্ব চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে।

পরিকল্পনা মতে, সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান সংশ্লিষ্ট ১০ হাজার পদ বিলুপ্ত করবে, যেগুলো মূলত প্রকৌশলী ও তাদের মতো যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের জন্য নির্ধারণ করা হয়। যেসব ইউনিটকে সহজে মোতায়েন করা হয় না, সেগুলো থেকে আরও ২,৭০০ পদ এবং প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কাজের জন্য তৈরি আরও ৬.৫০০ পদ বিলুপ্ত করা হবে।

এসব পরিবর্তন নিয়ে কথা বলার সময় ওরমুথ স্বীকার করেন, সেনাবাহিনী “অনেক বছর ধরেই ভালো করে নিয়োগ দিতে পারছে না। শুধু গত ১৮ মাসের শিরোনাম দেখলে বিষয়টি পুরোপুরি বোঝা যাবে না”। তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী ২০১৪ সাল থেকেই নতুন নিয়োগের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়ে আসছে।