সোমবার পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে। পাকিস্তানে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হলো। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর সংযোগ পাকিস্তানে টানা দশম দিনের জন্য বিঘ্নিত হয়েছে।
পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর ব্যাপক নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার জন্য পরিচিত দেশটিতে বাকস্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আসাদ আলী তুর একজন স্বাধীন সাংবাদিক। এক্স-এ তার প্রায় ৩ লাখ ফলোয়ার এবং ইউটিউব চ্যানেলে তার প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এফআইএ তাকে হেফাজতে নিয়েছে। তার আইনজীবী এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
ইমান জয়নব মাজারি-হাজির বলেন, রাজধানী ইসলামাবাদে এফআইএ-র সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং সেন্টার তুরকে দেশের প্রধান বিচারপতিসহ শীর্ষ বিচারকদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগের তদন্তে তলব করে।
এইআইএ বা সরকারি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে তুরের আটকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তুরের আটকের বিষয়টি সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের ক্ষুব্ধ করেছে।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ইমরান রিয়াজ খানকে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। তিনি কোনো অপরাধ করার কথা অস্বীকার করেছেন। শুক্রবার আদালতের শুনানির সময় তিনি বিচারককে বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কথিত কারচুপির বিষয়ে তার সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের কারণে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের হাতে পাঁচ মাস আটক ও নির্যাতনের পর সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছিলেন ইমরান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ তার ফলোয়ার ৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন। তার ইউটিউব চ্যানেলে ৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে।
এদিকে ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগের মধ্যে পাকিস্তানে এক্স-এর কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার ১০ দিন পর সোমবারও তাদের পরিষেবা বন্ধ ছিল।
লিথুয়ানিয়া ভিত্তিক ইন্টারনেট শাটডাউন ট্র্যাকার সার্ফশার্ক গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে পাকিস্তানের পাঁচবার ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। এর ফলে ১২৮ মিলিয়ন ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।