আরব সাগরে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী একটি জাহাজ আটক করেছিল। এই জাহাজে সন্দেহভাজন ইরান-নির্মিত অস্ত্র চালানের দায়ে বৃহস্পতিবার চার বিদেশী নাগরিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আরব সাগরে অভিযান চালানোর সময় যুক্তরাষ্ট্রের দুইজন নেভি সীল মারা গেছে।
রিচমন্ডে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা আদালতে বৃহস্পতিবার দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ওই চার আসামী, যাদের প্রত্যেকের কাছে পাকিস্তানের পরিচয়পত্র রয়েছে, সন্দেহভাজন ইরান-নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্রের সরঞ্জাম চালান করছিল। উল্লেখ্য, এই ধরনের অস্ত্র হুথি বিদ্রোহীরা সাম্প্রতিক একাধিক হামলায় ব্যবহার করেছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল লিজা মোনাকো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছেন, “ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য উন্নততর অস্ত্রের সরবরাহ এই অঞ্চলে আমেরিকা ও আমাদের সহযোগী দেশগুলির জনগণ ও স্বার্থের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
মুহম্মদ পাহালওয়ানের বিরুদ্ধে উন্নততর ক্ষেপণাস্ত্রের উপাদান পাচারের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই উপাদানের মধ্যে রয়েছে একটি ‘ওয়ারহেড’ যা লোহিত সাগর ও সংলগ্ন জলসীমায় বাণিজ্যতরী ও নৌবহরের উপর হুথি বিদ্রোহীরা ব্যবহার করবে, এই তথ্য সে জানত বলে অভিযোগ। জাহাজে ওঠার সময় যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলরক্ষী কর্মকর্তাদেরকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পাহালওয়ান ছাড়াও অন্যান্য আসামি মহম্মদ মজহার, গুফরান উল্লাহ ও ইজহার মুহম্মদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পাহালওয়ানের কৌঁসুলি সহকারী সুপারভাইজরি ফেডারেল পাবলিক ডিফেন্ডার অ্যামি অস্টিন বলেন, পাহালওয়ান বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জেলা আদালতে প্রাথমিক হাজিরা দিয়েছিল এবং আটক সংক্রান্ত শুনানির জন্য মঙ্গলবার তাকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে।
প্রসিকিউটরদের বক্তব্য অনুযায়ী, সোমালি উপকূলের অদূরে আরব সাগরে ১১ জানুয়ারি রাতে একটি ছোট, পতাকাবিহীন জাহাজ (যা ঢাউ নামে বিবৃত) আটক করে নৌবাহিনী এবং সেই জাহাজে ১৪ জনের সন্ধান পায় তারা।
নৌবাহিনী ঢাউ নামের এই জাহাজটিতে তল্লাশি চালায় এবং প্রসিকিউটররা বলেছেন, বাহিনী ইরান-নির্মিত অস্ত্র খুঁজে পায়। এই অস্ত্রের মধ্যে ছিল মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও জাহাজে ব্যবহৃত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরোধক তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান ও সরঞ্জাম।
ঢাউ-তে থাকা ১৪ জন নাবিকের সকলকেই ইউএসএস লিউইস বি পুলারে আনা হয়েছিল। এফবিআইয়ের এক এফিডেভিট অনুযায়ী, ঢাউতে থাকা নাবিকরা স্বীকার করেছে যে, তারা ইরান থেকে পাড়ি দিয়েছিল, যদিও এদের মধ্যে অন্তত একজন প্রথম দিকে জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা পাকিস্তান থেকে রওনা হয়।
ওই এফিডেভিটে বলা হয়েছে, ক্রু সদস্যদের সঙ্গে উপগ্রহ ফোনের মাধ্যমে বহুবার ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের সদস্যদের যোগাযোগ হয়েছিল।