বছরের শুরুতে যখন জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পে ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল এবং হাজার হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তখন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে “সহানুভূতি ও সমবেদনার” বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
উত্তর কোরিয়ার প্রধান সংবাদপত্রে প্রকাশিত কিমের বার্তাটি ছিল সংক্ষিপ্ত এবং অনেক দিক দিয়েই অসাধারণ। তবে এটি অস্বাভাবিকভাবে সমঝোতামূলকও ছিল। কারণ দুই দেশের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই এবং উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচারকরা নিয়মিতভাবে জাপানি নেতাদের অপদস্থ করে থাকে।
এক মাসের বেশি সময়ে পরে উত্তর কোরিয়া এখন আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তারা জাপানের সাথে সম্পর্কের উন্নতি করতে ইচ্ছুক হতে পারে। তবে এমনটি যে ঘটবে তা নিয়ে অনেক বিশ্লেষক সন্দিহান।
কয়েক দশক ধরে অপহরণ ইস্যুটি জাপান-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কোন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাপান বলছে, উত্তর কোরিয়া ১৯৭০ ও ’৮০’র দশকে জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতিতে গুপ্তচরদের প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ১৭ জন জাপানি নাগরিককে অপহরণ করেছিল।
উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ জন জাপানি নাগরিককে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। ২০০২ সালে উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষমা প্রার্থনা প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অপহৃতদের মধ্যে পাঁচজনকে ফিরিয়ে দেয়। তাদের দাবি, অন্যরা এর মধ্যে মারা গেছে। জাপানের অনেকে বিশ্বাস করে, অপহৃতদের অনেকে এখনো বেঁচে আছে।
তবে খুব কম বিশ্লেষকই মনে করছেন যে, টোকিও এবং পিয়ংইয়ং সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পাবে। কারণ উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন নেতা কিম জং উনের পিতা কিম জং ইল অপহরণ সমস্যার নিস্পত্তি হয়ে গেছে বলে ঘোষণা করেছিলেন।
নেদারল্যান্ডসের লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও কোরিয়া বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টফার গ্রিন বলেন, “উত্তর কোরিয়ার প্রশাসনের জন্য সেই প্রসঙ্গে ফিরে যাওয়া খুবই কঠিন।”
গ্রিন আরও বলেন, “কিম ইয়ো জং-এর বিবৃতিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উত্তর কোরিয়ানরা এরই মধ্যে তাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছে। তারা বলছে, অপহরণের বিষয়টি অবশ্যই মাথাব্যাথার কারণ হওয়া উচিত নয়, কারণ ইতোমধ্যে এটির সমাধান করা হয়েছে।”