ভারতে উপ প্রধানমন্ত্রী, উপ মুখ্যমন্ত্রী পদ সংবিধান স্বীকৃত না হলেও 'বেআইনি নয়'

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ভবন। (ফাইল ছবি)

সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারি একটি জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বলেছে, সংবিধানে না থাকলেও উপ মুখ্যমন্ত্রী বা উপ প্রধানমন্ত্রী পদ বেআইনি নয়। কোনও বিধায়ক বা সংসদ সদস্যকে বিশেষ মর্যাদা দিতে এই পদ দেওয়া যেতে পারে।

ভারত ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হওয়ার পর দেশের প্রথম মন্ত্রীসভায় একইসঙ্গে উপ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের মন্ত্রীসভায় উপ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবী লাল। লালকৃষ্ণ আডবাণী উপ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রীসভায়।

পশ্চিমবঙ্গে ১৯৬৭ এবং ১৯৬৯ সালে দুই যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। এই সময় দেশের অনেকগুলি রাজ্যে কংগ্রেস বিরোধী জোট ক্ষমতায় আসে। জোটের অঙ্কে অনেক নেতাই উপ মুখ্যমন্ত্রী হন।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্ত্রীসভায় কেউ উপ মুখ্যমন্ত্রী নন। তিনি ক্ষমতায় আসার আগে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে উপ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মন্ত্রীসভায় কেউ এই পদে ছিলেন না।

সদ্য বিহারে বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়েছেন জনতা দল ইউনাইটেড-এর প্রধান নীতীশ কুমার। জোট অঙ্কে তার মন্ত্রীসভায় বিজেপির দুজন উপ মুখ্যমন্ত্রী আছেন।

একই অঙ্কে মহারাষ্ট্রে বিজেপির একনাথ শিণ্ডের মন্ত্রীসভায় উপ মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ ও এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার।

আবার উত্তর প্রদেশে বিজেপির যোগী আদিত্যনাথের মন্ত্রীসভায় দলেরই দুই প্রবীণ নেতা উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে আছেন।

উপ মুখ্যমন্ত্রী বা উপ প্রধানমন্ত্রী - এই দুই পদ কখনও জোটের অঙ্ক, কখনও ভারতের রাজনীতিতে জাত-ধর্মের সমীকরণ অথবা দলীয় বিবাদ মোকাবিলায় দেওয়া হয়।

দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার জানিয়েছে, "জোট সরকার বা মন্ত্রীসভায় কোনও প্রবীণকে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিলেও তাতে অন্য মন্ত্রীদের গুরুত্ব কমে না। কমে না মুখ্যমন্ত্রীর গুরুত্বও।"