পাকিস্তান নির্বাচনে ইমরান খানের সমর্থকরা এগিয়ে, কিন্তু নাওয়াজ শরিফ জোট সরকারের কথা বলছেন  

কারাবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা ইসলামাবাদে টেলিভিশনে নির্বাচনের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করছেন। ফটোঃ ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪।

পাকিস্তানের সংসদীয় নির্বাচনে কারাবন্দি প্রতিদ্বন্দ্বি ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকার পর, সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কৌশল পরিবর্তন করে শুক্রবার বলেছেন যে, তিনি একটি জোট সরকার গঠনের চেষ্টা করবেন।

শরিফ সমর্থকদের বলেছেন, অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তিনি তাঁর ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে পাঠাচ্ছেন। জোট সরকারে যোগ দিতে এই নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

প্রকাশিত ফলাফলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে থাকতে দেখার পর শরিফ এই বক্তব্য রাখেন। ফলাফল দেখে অনেকে অবাক হয়েছেন, কারণ খানের সমর্থকরা এবং একটি মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছিল যে নির্বাচনে ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে।

সাবেক ক্রিকেট তারকা, পরে ইসলামপন্থী রাজনীতিক ইমরান খান, যার তৃণমূল স্তরে ব্যাপক সমর্থন রয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তাঁকে লড়তে দেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সাজা ও তাঁর বিরুদ্ধে চলা একাধিক মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ লাহোরে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। ফটোঃ ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪।

বৃহস্পতিবার ভোট দেওয়ার পর শরিফ সংবাদদাতাদের বলেছিলেন যে, পাকিস্তানে তিনি একক দলের পূর্ণ পাঁচ বছরের সরকার চান এবং জোটের ধারণাকে তিনি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

তবে শুক্রবার তিনি স্বীকার করেন, “অন্যদের সমর্থন ছাড়া সরকার গঠনের মতো আমাদের যথেষ্ঠ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই এবং এই জোটে আমরা মিত্রদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি যাতে পাকিস্তানকে সমস্যামুক্ত করতে আমরা যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে পারি।”

লাহোরে তিনি সমর্থকদের বলেন, “লড়াইয়ের মনোভাব রয়েছে যাদের আমি তাদের সঙ্গে লড়াই করতে চাই না। সব বিষয় নিষ্পত্তি করতে আমাদের একসঙ্গে বসতে হবে।”

ইমরান খানের দলের প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ‘ক্রিকেট ব্যাট’ ব্যবহার করতে না দেওয়ায় তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়তে বাধ্য হয়েছেন। পাকিস্তানে নিরক্ষর ভোটারদের সুবিধার জন্য দলকে প্রতীক দেয়া হয়।

শুক্রবার রাতের মধ্যে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের ২৩৫টি আসনের ফলাফলে (প্রায় ৯০ শতাংশ) দেখা গেছে, ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই দল সমর্থিত প্রার্থীরা ৯৫টি আসনে জয়লাভ করেছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ দল পেয়েছে ৬৬টি আসন।

এই নির্বাচনে তৃতীয় একটি বড় দল থাকায়, কোনও দলই এককভাবে সরাসরি বিজয় ঘোষণা করতে পারেনি।