ইরাকে বিমান হামলা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র পথ পরিবর্তনে নারাজ

ইরাকের নাজাফ শহরে কাতাইব হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া বাহিনীর একজন শীর্ষ কমান্ডার উইসাম মোহাম্মদ আল-সায়েদির মরদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া কমান্ডারকে লক্ষ্য করে সর্বসাম্প্রতিক বিমান হামলা চালানোর পর দেশটির জনগণের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না।

বরঞ্চ, বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা মঙ্গলবারের হামলার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন এবং সতর্ক করে দিয়েছেন যে, তাদের বাহিনী আরও হামলার শিকার হলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা বোধ করবে না।

“আমরা ইরাকের সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ মাত্রায় শ্রদ্ধাশীল,’’ হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কার্বি সাংবাদিকদের বলেন। ‘’কিন্তু দেখুন, ইরাক সরকারের আমন্ত্রণে সেখানে থাকা আমাদের সেনাদের ওপর যদি হামলা না হতো, তাহলে পাল্টা জবাব দেবার প্রয়োজন হতো না।”

পেন্টাগন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তা একই ধরনের বার্তা পাঠিয়েছেন।

জর্ডানের টাওয়ার টুয়েন্টি টু ঘাঁটিতে প্রাণঘাতী হামলা এবং অক্টোবরের মাঝামাঝি ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী উপর ১৬৮টি হামলার জন্য ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটনের নজর বিশেষ করে কাতাইব হিজবুল্লাহর ওপর পড়েছে। পেন্টাগনের কিছু কর্মকর্তা বলেছেন, জর্ডান হামলা ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীর “চিহ্ন বহন করে।”

মঙ্গলবারের বিমান হামলাটি কাতাইব হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার উইসাম মোহাম্মদ আল-সায়েদিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘’ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর ওপর হামলার সরাসরি পরিকল্পনা ও তাতে অংশ নেয়ার জন্য আল-সায়েদি দায়ী।’’ তবে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি ছিলেন সিরিয়ার কাতাইব হিজবুল্লাহর শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি সিরিয়ায় সব ধরনের অভিযানের দেখাশোনা করতেন।

গত শুক্রবার সিরিয়া ও ইরাকে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ব্যবহৃত সাতটি স্থানে বিমান হামলার পর আল-সায়েদিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় যাতে তিনি নিহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা এখন মনে করেন, এই হামলায় ৮০টির বেশি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হয়েছে এবং ৪০ জন মিলিশিয়া সদস্য নিহত বা আহত হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকার পেন্টাগন সংবাদদাতা কার্লা বাব এবং হোয়াইট হাউসের ব্যুরো চিফ প্যাটসি উইডাকুসোয়ারা এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন।