পাকিস্তানে নির্বাচনের উপর ৭০ শতাংশ নাগরিকের আস্থা নেই, বলছে জরিপ 

করাচির এক ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তারা সব ঠিকঠাক করছেন।

নতুন একটি জরিপ ইঙ্গিত দেয়, পাকিস্তানের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি নাগরিকের বৃহস্পতিবারের সংসদীয় নির্বাচনের আগে তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং সরকারের সততার প্রতি আস্থার অভাব রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্যালাপ পোলিং কোম্পানির জরিপে দেখা গেছে, পাকিস্তানিরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ দ্বারা ক্রমবর্ধমানভাবে নিরুৎসাহিত হচ্ছে যা তাদের দেশের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং ভোটের আগে অসন্তোষ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

জরিপে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের পর পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিবেশ 'অর্থনৈতিক পরিবেশের মতোই হতাশাজনক'। এতে আরও বলা হয়, ‘প্রতি ১০ জন পাকিস্তানির মধ্যে সাতজনই তাদের নির্বাচনের সুস্ঠতা নিয়ে আস্থার অভাব বোধ করেন’।

নির্বাচন সম্পর্কে তাদের সংশয়ের পাশাপাশি, ৮৮ শতাংশ পাকিস্তানি মনে করেন তাদের সরকার ব্যাপকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত।

পাকিস্তানিদের মধ্যে অর্থনৈতিক হতাশা ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং ৭০ শতাংশ নাগরিক বিশ্বাস করে, তারা যেখানে বাস করে সেখানকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে।

গ্যালাপ জানিয়েছে, তারা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে পাকিস্তানে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী এক হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মুখোমুখি সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে প্রায় ২৪ কোটি ১০ লাখ মানুষের পারমাণবিক শক্তিধর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপট অস্থির হয়ে আছে।

পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ৭১ বছর বয়সী পাকিস্তানি নেতাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

ইমরান খান আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। সে সময় একটি আদালত তাকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইমরান খান।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খান এবং তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের আরও অনেক প্রার্থীকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করেছে। প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কের দলকে তাদের আইকনিক ক্রিকেট ব্যাট নির্বাচনী প্রতীক থেকে বঞ্চিত করার কমিশনের সিদ্ধান্তকেও সমর্থন করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

পিটিআই কয়েক মাস ধরে সেনা সমর্থিত রাষ্ট্রীয় হামলার শিকার হয়েছে। তাদের প্রার্থীসহ শত শত তৃণমূল কর্মীকে আটক, অপহরণ এবং দল ছাড়তে বা নির্বাচন বা রাজনীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে।