কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পেশ করা অন্তর্বর্তী বাজেট নিয়ে ভারতে সংসদে সরব বিরোধীরা

ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং সংসদে কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।

গত বৃহস্পতিবার ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পেশ করেন অন্তর্বর্তী বাজেট। লোকসভা নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান সংসদে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা হবে।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পেশ করা বাজেটে বিজেপি বিরোধী রাজগুলিকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি। অবিলম্বে এই বঞ্চনা বন্ধ না হলে দক্ষিণ ভারতকে পৃথক দেশ গড়ার দাবিতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন কর্নাটকের একজন কংগ্রেস নেতা।

কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে বুধবার ৭ ফেব্রুয়ারি সংসদে বিক্ষোভ দেখাবেন কর্ণাটকের সাংসদররা।

কেন্দ্রের বঞ্চনাকে 'সৎ মা'-এর আচরণের সঙ্গে তুলনা করে সোমবার ৫ ফেব্রুয়ারি সংসদে চলতি বাজেট অধিবেশনে সরব হন সংসদে কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।

কর্নাটকের প্রসঙ্গ টেনে অধীর চৌধুরী এদিন বলেন, “প্রতিটি বিজেপি বিরোধী রাজ্যকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ হল কর্নাটক। কয়েক মাস আগে পর্যন্ত কর্নাটকে সবকিছুই ছিল 'হাঙ্কি ডরি'-র মতো। কিন্তু, নতুন সরকার আসার পর থেকে কেন্দ্র টাকা দিতে সমস্যা শুরু করেছে।"

কর্ণাটকে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। বিজেপির আমলে সেই রাজ্যের জন্য কেন্দ্রের বাজেট বরাদ্দের তুলনায় কংগ্রেস আমলে অর্থ বরাদ্দ কমে যাওয়ার প্রসঙ্গেই এই মন্তব্য করেন অধীর চৌধুরী।

১৫ তম অর্থ কমিশনের অধীনে ভারতীয় মুদ্রায় ১১ হাজার কোটির বেশি রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ এনে কংগ্রেস সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, "বর্তমান অর্থমন্ত্রীর আমলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। "

নিজের ভাষণে এর উত্তর দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, “আপনার কথা মতো কর্নাটকে ৬ মাস আগে পর্যন্ত সবকিছুই 'হাঙ্কি ডোরি' ছিল। যদি তাই হয় তবে কী ভুল হয়েছিল? খোঁজ নিয়ে দেখুন, আপনাদের সরকার সে রাজ্যে কোন কোন খাতে অর্থ খরচ করেছে, আদৌ সংশ্লিষ্ট খাতে অর্থ খরচ করা যায় কিনা। তাই কেন্দ্রকে দোষারোপ করবেন না। কেন্দ্র নিয়মের বাইরে কিছু করছে না।“

অন্তর্বর্তী বাজেটে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিএসটির খাতে রাজ্য থেকে অর্থ নিয়েও প্রাপ্য টাকা না দেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছে কেরলের বামফ্রন্ট এবং তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার।

কেন্দ্রের চালু করা জিএসটি প্রসঙ্গে সোমবার লোকসভায় সরব হয়েছিলেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। তার উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “কোন রাজ্য কর বাবদ কত টাকা পাবে, সেটা অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুসারে হয়ে থাকে। এর সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইচ্ছার কোনও সম্পর্ক নেই। চাইলেও এক্ষেত্রে বরাদ্দ পরিবর্তন করার অধিকার আমার নেই।”