হেফাজত নেতা মামুনুলের ২ মামলায় জামিন বহাল রাখলো আপিল বিভাগ

সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করার অভিযোগে দায়ের করা দু’টি মামলায় জামিন বহাল রাখার এই সিদ্ধান্ত দিলো আপিল বিভাগ। সোমবার (৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে মামুনুল হকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ আর রায়হান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

পরে জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, প্রায় তিন বছর থেকে জেলে আছেন মামুনুল হক। এ দু’টি মামলায় এখনো পুলিশ অভিযোগ পত্র দাখিল করেনি। ফলে তিনি জামিন পেতে পারেন। এই প্রেক্ষাপটে পরে আপিল বিভাগ তার জামিন বহাল রেখেছে।

গত ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে মামুনুল হককে এক নারীসহ অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ লোকজন।

পরে পুলিশ গিয়ে মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় খবর পেয়ে হেফাজত ও মাদরাসার ছাত্ররা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।

এর পর, হেফাজতের নেতা–কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর করে তারা।

একই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

রয়েল রিসোর্ট ঘটনার ২৭ দিন পর, ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন।

এছাড়া, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর, রয়েল রিসোর্টে ভাঙচুরসহ বেশ কিছু অভিযোগে পৃথক মামলা হয় মামুনুলের বিরুদ্ধে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর ঘিরে সহিংসতা ও রিসোর্ট-এর ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দু’টি মামলা হয় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত বছরের ৯ মে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নারায়ণগঞ্জের সোনাগাঁও থানায় করা দুই মামলায় মামুনুল হককে জামিন দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, গত বছরের ১০ মে এই দুই মামলায় জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর পর,আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে মামলাগুলো শুনানির জন্য ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার আপিল বিভাগ দু’টি মামলায় তার জামিন বহাল রাখে।