কর, ক্রমবর্ধমান ব্যয় ও সস্তায় আমদানি বিষয়ে আরও সাহায্য চেয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে চাপ সৃষ্টি করতে ব্রাসেলসে সমবেত হন কৃষকরা। তারা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দিকে ডিম ছোঁড়ে্ন, ভবনের কাছে আগুন ধরিয়ে দেন এবং আতশবাজি জ্বালান।
পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র ব্রাসেলস-এর প্রধান এলাকাগুলি প্রায় ১ হাজার ট্র্যাক্টর দিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
একটি ট্র্যাক্টরে টাঙানো ব্যানারে লেখা ছিল “আপনারা যদি পৃথিবীকে ভালবাসেন, তাহলে যারা এর দেখভাল করেন, তাদের সমর্থন করুন।” বেলজিয়াম ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে আসা কৃষকরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আরেকটি ব্যানারে লেখা: “কৃষক নেই, খাদ্য নেই।”
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কয়েক ব্লক দূরে সেন্ট্রাল স্কয়ারে নেতাদের যেখানে সাক্ষাৎ করার কথা সেই বেষ্টনীর পিছনে পাহারায় দাঁড়িয়েছিল দাঙ্গা পুলিশরা। এখানে বহু ট্র্যাক্টর জড়ো করা হয়।
ব্রাসেলসের বাইরে থেকে আসা এক কৃষক কেভিন বার্টানস বলেন, “আমাদের অবশ্যই আশা রয়েছে যে এই মানুষগুলি কৃষিকাজকে জরুরি বলে মনে করেন। এটা খাদ্যের প্রশ্ন।”
কৃষকরা বলেছে, তাদের যথেষ্ট অর্থ দেওয়া হচ্ছে না এবং কর ও গ্রিন আইনে তাদের দমবন্ধ অবস্থা। পাশাপাশি বিদেশ থেকে অন্যায্য প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে তারা।
ইউক্রেন থেকে কৃষিজ পণ্যের আমদানি কমাতে এবং পতিত জমিতে পরিবেশগত কিছু নিয়ম শিথিল করতে ইইউ-র কার্যনির্বাহী কমিশনের একাধিক প্রস্তাবসহ তারা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফ্রান্সে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে কৃষকরা। এই দেশের সরকার কৃষিতে প্রয়োজনীয় ডিজেলে ভর্তুকি ধীরে ধীরে হ্রাস করার পরিকল্পনা বাতিল করেছে এবং আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে, কৃষকরা বলছে যে, এটাই যথেষ্ট নয়। বেলজিয়াম, ইতালি, স্পেন ও পর্তুগাল-সহ ইউরোপের অনেক দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
চলতি বছরের জুন মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচন হতে চলেছে। এই নির্বাচনের আগে ইউরোপ জুড়ে এই বিক্ষোভে চরম দক্ষিণপন্থীরা লাভবান হতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে কৃষকদের সংকট না থাকলেও তারা এই বিষয় নিয়ে সামান্য হলেও আলোচনা করতে বাধ্য।
শীর্ষ সম্মেলনে হাজির হয়ে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার দ্য ক্রু বলেন, কৃষকদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।