পাকিস্তানঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১০ বছরের কারাদণ্ড

ফাইল ছবি - পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান লাহোরে তার সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন। ( ১৩ আগস্ট, ২০২২)

মঙ্গলবার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি বিশেষ আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কিত রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করেছেন।

ইমরান খানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে সাইফার নামে পরিচিত একটি গোপন তারবার্তার জেরে তার বিরুদ্ধে ঐ মামলা করা হয়।

ইমরান খান দাবি করেন, ওই কূটনৈতিক তারবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পাকিস্তানে আমেরিকান প্রভাব মুক্ত পররাষ্ট্র নীতিতে চাপ প্রদানের কারণে শাস্তি হিসেবে সামরিক সহায়তায় তার সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। ওয়াশিংটন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধী জোটের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। ৭১ বছর বয়সী খান এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সৃষ্টি বলে সাইফার ট্রায়ালকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই "মিডিয়া বা জনসাধারণের প্রবেশাধিকার ছাড়া" আদালতের এই রায়কে “সম্পূর্ণ প্রহসন এবং আইনের অবজ্ঞা” বলে নিন্দা জানিয়েছেন। দলটি জানিয়েছে, তাদের আইনি দল “উচ্চ আদালতে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবে” এবং তারা আশা করছে, এই সাজা স্থগিত করা হবে।

এই বিচারকার্যটি ইসলামাবাদের নিকটে একটি সুরক্ষিত কারাগারের অভ্যন্তরে একক বিচারকের ট্রাইবুন্যালে করা হয়। এই সময় বিদেশী বা দেশি কোন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির প্রবেশাধিকার ছিল না।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় মঙ্গলবারের এই সাজা ঘোষণা দেয়া হলো।

২০২২ সালের মার্চ মাসে ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এই সাইফারটি ইসলামাবাদে পাঠিয়েছিলেন। এক মাস পরে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

ক্ষমতাচ্যুত পাকিস্তানি নেতা বলেছেন, তার সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশী "ষড়যন্ত্র" উন্মোচন করার জন্য তিনি তার ভোটারদের সাথে সাইফারের বিষয়বস্তু ভাগ করে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে বিতর্কিত ভাবে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। গত আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। পাকিস্তানের নির্বাচনী আইন অনুসারে তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।