ইউক্রেন, ইসরাইল এবং তাইওয়ানের জন্য বৈদেশিক সহায়তা ব্যয় হিসেবে ১০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার অবমুক্ত করা এবং অভিবাসন সংক্রান্ত নিয়ম কঠোর করা সংক্রান্ত একটি চুক্তি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কারণে বানচাল হওয়ার হুমকির মধ্যে রয়েছে। হোয়াইট হাউস এবং উভয় দলের সেনেটাররা কয়েক মাস ধরে এই চুক্তিটি নিয়ে কাজ করেছেন।
অভিবাসনকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বলে মনে করেন এমন ভোটারদের সমর্থন পেয়ে গত সপ্তাহে আইওয়াতে জয় নিশ্চিত করার পর মঙ্গলবার নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে জয়ী হন ট্রাম্প।
মঙ্গলবার বিজয় ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ঠিকই বলেছি- অভিবাসন একটি বড় বিষয়।” তিনি বলেন, “লাখ লাখ মানুষ অবৈধভাবে আমাদের দেশে ঢুকছে। তারা এখানে কারাগার থেকে আসে; মানসিক হাসপাতাল থেকে আসে।” তবে তিনি তার এই দাবির সমর্থনে বিস্তারিত কোনো বিবরণ দেননি।
অভিবাসন-বিরোধী 'উস্কানি'
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসন-বিরোধী উস্কানিমূলক ভাষা ব্যবহার করার সময় এমন কথাও বলেছেন যে, অভিবাসীরা “আমাদের দেশের রক্তকে বিষিয়ে তুলছে।”
হাউস স্পিকার মাইক জনসন, যিনি একজন রিপাবলিকান, এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতারা বাইডেন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা তহবিল সংক্রান্ত অনুরোধের বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ নিয়ে আলোচনা করতে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করার কয়েক ঘণ্টা পরে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় নিরাপত্তা তহবিলের মধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের জন্য অর্থায়ন এবং ইসরাইল ও ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য অর্থের কথা বলা আছে। এই বিষয়গুলোকে রিপাবলিকানরা সীমান্ত নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার সাথে একত্রিত করে দিয়েছে।
আমেরিকানরা বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নিয়ে ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। গত ডিসেম্বরে এপি-এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চ যে জরিপ করেছে, তাতে দেখা গেছে, ইউক্রেন ও গাজায় যুদ্ধের কারণে বৈদেশিক নীতি আগের বছরগুলোর তুলনায় বড় একটি উদ্বেগ হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে।
পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে উদ্বেগ
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ বলেছেন, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে পররাষ্ট্রনীতি সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাওয়া উচিত। আগে এই বক্তব্যের সাথে একমত হওয়া অংশের পরিমাণ ছিল ৪১ শতাংশ। অভিবাসন ও সীমান্ত প্রাচীরকে শীর্ষ উদ্বেগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী, আগে যেটা ২৭ শতাংশ ছিল।
আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো এমেরিটাস নরম্যান অর্নস্তেইন বলেন, সিমান্ত এমন একটি ইস্যু যা রিপাবলিকান পার্টির তৃণমূল সমর্থকদের সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত করে। ফলে, ডেমোক্র্যাটরা বিজয় হিসেবে দাবি করতে পারে, এমন একটি বিল নির্বাচনের বছরে পাস করা রিপাবলিকান বার্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “জো বাইডেনকে লাভবান করতে পারে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারনার জন্য সীমান্তের এই ইস্যুটিকে আলোচনার টেবিল থেকে সরিয়ে নিতে পারে এমন কিছু তারা করতে চায় না।”
নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে ক্যারোলিন প্রেসুটি এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন।