মহুয়া মৈত্র: অভিযোগকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীকে বয়ান দিতে সিবিআই-এর তলব

তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র এবং প্রাক্তন বন্ধু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই।

মহুয়া মৈত্র সংসদে ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করেছেন, এই অভিযোগ তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং মৈত্রর প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাকে তলব করা হয়েছে,তার বয়ান রেকর্ড করার জন্য।

ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্রর। লোকসভার এথিক্স কমিটি তাকে সরকারি বাংলো খালি করার নির্দেশও দিয়েছে, যার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আপিল করেছেন মৈত্র।

গত বছর ২০২৩-এর অক্টোবর মাসে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সংসদে ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে। তিনি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।

তার এই অভিযোগের ভিত্তি ছিল - সিবিআই প্রধানকে লেখা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের একটি চিঠি। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপহার এবং নগদ অর্থের বিনিময়ে সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া।

এই অভিযোগের কিছুদিন পর হিরানন্দানি জানান মহুয়া মৈত্রর আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সংসদে প্রশ্ন পাঠিয়েছিলেন তিনি। মহুয়া মৈত্র পাসওয়ার্ড শেয়ার করার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে সরকারের কোনও রেগুলেশন নেই বলেও জানান।

এছাড়া শুরু থেকেই প্রশ্ন-ঘুষ কাণ্ডের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহুয়া মৈত্র।

নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটি তদন্ত শুরু করে, হাজিরা দিতে হয় মহুয়া মৈত্রকে এবং এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়ে যায়।

এরই মধ্যে আইনজীবী দেহাদ্রাই দিল্লির থানায় তৃণমূলের প্রাক্তন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, মহুয়া মৈত্র কাউকে না জানিয়েই তার বাড়িতে আসেন। সম্প্রতি তিনি এও অভিযোগ করেছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের উপরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের দিয়ে মহুয়া মৈত্র নজর রাখছেন তার ওপর।

গত বছরের শেষের দিকে এথিক্স কমিটি প্রথম ডেকে পাঠিয়েছিল মহুয়ার বিরুদ্ধে দুই অভিযোগকারী বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী দেহাদ্রাইকে। এই প্রেক্ষিতে কেন অভিযুক্তকে না ডেকে আগে অভিযোগকারীদের ডাকা হয়েছে তা নিয়ে উত্তপ্তও হয় কমিটির বৈঠক।

দেহাদ্রাই গত অক্টোবর মাসে তদন্ত শুরু হওয়ার সময়েই যা কিছু মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রমাণ বলে দাবি করেছিলেন তা এথিক্স কমিটির সামনে পেশ করেন। যা মহুয়ার সংসদ সদস্য পদ খারিজ হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।