গাজা ভূখণ্ডে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য সোমবার আবারো আহবান জানালেন জাতিসংঘের মহাসচিব। দুর্ভিক্ষ ও রোগের বিস্তার এড়াতে, ত্রাণ সরবরাহের জন্য আরো প্রবেশপথের দরকার বলে জানিয়েছেন ত্রাণ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর প্রধানরা। এর পর মহাসচিব এ আহবান জানান।
আন্তনিও গুতেরেস, জাতিসংঘে সংবাদদাতাদের বলেন, “ফিলিস্তিনি জনগণকে সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দেয়া, কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। গাজায় মানবিক পরিস্থিতি বর্ণনাতীত। কোথাও কেউ নিরাপদ নয়।”
গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের “স্পষ্ট লঙ্ঘনে” তিনি “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।” তিনি আরো বলেন, “অনাহারের দীর্ঘ ছায়া গাজার মানুষদের পিছু নিয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে রোগ, অপুষ্টি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য-ঝুঁকি।”
জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো সোমবার সতর্ক করেছে যে গাজা ভূখণ্ডে প্রবেশের বাড়তি পথ ছাড়া, ইতোমধ্যেই ধুঁকতে থাকা ২২ লাখ মানুষের মধ্যে দুর্ভিক্ষ ও রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধানরা এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রান সহায়তা পৌঁছে দিতে, আরো নতুন প্রবেশ পথ খোলা দরকার; সীমান্ত ফাঁড়ি দিয়ে দৈনিক আরো বেশি সংখ্যক ট্রাক চলাচলের অনুমতি প্রয়োজন; আর, মানবিক কর্মীদের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা হ্রাস ও ত্রাণ বিতরণকারীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দরকার।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে, গাজার ২২ লাখ মানুষের মধ্যে ৯ লাখের বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেন, “ নতুন বছর শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ২৯টি মিশনের মধ্যে মাত্র সাতটি কাজ করতে পারছে।”
ডব্লিউএফপি বলেছে, গাজায় প্রবেশ করার জন্য বর্তমানে মাত্র দুটি সীমান্ত-পথ খোলা রয়েছে। এ কারণে, মাসিক লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২০ শতাংশ পূরণ করতে পারছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘ সমর্থিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ফেজ ক্লাসিফিকেশন গত মাসে সতর্ক করেছিলো যে, গাজার পাঁচ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি ভয়াবহ মাত্রার ক্ষুধা মোকাবেলা করছে। আর, প্রায় ৪ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে।