রাশিয়ার আসন্ন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন বরিস নাদেঝদিন। বৃহস্পতিবার সৈন্যদের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ক্রেমলিনের যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে “বড় ভুল” বলে অভিহিত করেছেন।
বরিস নাদেঝদিন সৈন্যদের স্ত্রীদের বলেন, এই যুদ্ধ “অবশ্যই পুতিনের একটা বড় ভুল এবং এর পরিণতি হবে ভীষণ গুরুতর।”
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যরা “তাদের ঋণ শোধ করছে , সত্যিই তাদের রক্ত ঝরাচ্ছে এবং নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে—আমরা তাদের প্রত্যাবর্তন চাই।”
নাদেঝদিন মধ্য-ডানপন্থী দল সিভিক ইনিশিয়েটিভের প্রতিনিধিত্ব করছেন। সংসদে এই দলের কোনও আসন নেই। পুতিনের বিরুদ্ধে লড়তে তিনি গোটা দেশ থেকে ১ লক্ষ সই জোগাড় করার চেষ্টা করছেন। দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার নেতৃত্বে রয়েছেন পুতিন।
মার্চের পুনর্নির্বাচনে পুতিনের জয় নিশ্চিত।
লাটাভিয়ার রাজধানী রিগাতে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেন, প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের আগে যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলে এগনোর পরিকল্পনা মস্কোর। আর তারপর রাশিয়া বৃহত্তর সামরিক পদক্ষেপ নেবে।
বৃহস্পতিবার দিনে আরও আগের দিকে এস্তোনিয়া সফরকালে জেলেন্সকি বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ স্থগিত হলে লাভবান হবে মস্কো, কারণ তারা অস্ত্রের সরবরাহ বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবে এবং “আমাদের গুঁড়িয়ে দেবে।”
জেলেন্সকি আরও বলেন, “ইউক্রেন ভূখণ্ডের যুদ্ধক্ষেত্রে সাময়িক বিরতি মানে যুদ্ধ স্থগিত হয়ে যাওয়া নয়। এটা যুদ্ধের সমাপ্তি নয়। রুশ ফেডারেশন বা অন্য কারও সঙ্গে রাজনৈতিক আলাপের পথ প্রশস্ত করবে না এই যুদ্ধবিরতি। এই স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র রুশ ফেডারেশনকেই লাভবান করবে।”
ইউক্রেনের শীর্ষ নেতা বুধবার লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনিয়াসে বলেন, তাঁর দেশের সামরিক বাহিনী বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, রুশ সামরিক বাহিনী অপ্রতিরোধ্য নয়, তবে রাশিয়ার ব্যাপক হারে নিক্ষেপ করা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলি গুলি করে নামাতে কিয়েভ সরকারকে আরও বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য পশ্চিমা মিত্রদের একান্ত প্রয়োজন।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, ইউক্রেনকে সাহায্য করতে পারে এমন দেশগুলিতে রসদ কম।
জেলেন্সকি বলেন, “অস্ত্র-ভাণ্ডার খালি। বিশ্ব প্রতিরক্ষার সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।”
ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ দুই বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। ইউক্রেন বলেছে, অভ্যন্তরিন ভাবে প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশ এবং আরও গোলাবারুদ ও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতে একাধিক বিদেশী সরকারের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে কাজ করার আশা করছে তারা।
এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট এলার ক্যারিস এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউক্রেনকে সাহায্য করতে গণতান্ত্রিক দেশগুলি অনেক কিছু করেছে, তবে আমাদের সম্মিলিতভাবে আরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার যাতে ইউক্রেন জয়ী হয় এবং আগ্রাসনকারী পরাস্ত হয়।”
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যত দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে, ইউক্রেনে পশ্চিমা সামরিক সরবরাহ ক্রমশ কমে গেছে। ইউক্রেনকে বাড়তি সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আবেদন সে দেশের কংগ্রেসে স্থগিত রয়েছে।