উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য অসমের বিজেপি সরকার ঘোষণা করেছিল, দু’টির বেশি সন্তানধারী নারী-পুরুষেরা সরকারি চাকরি পাবেন না। এবার মহিলাদের জন্য চালু করা একটি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সন্তান সংখ্যার শর্ত আরোপ করা হল।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নারী কল্যাণে নতুন সরকারি কর্মসংস্থান প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। 'মুখ্যমন্ত্রী মহিলা উদ্যোমিতা অভিযান' নামে নতুন এই প্রকল্পে নারীদের ছোট ব্যবসা, উদ্যোগের জন্য রাজ্য সরকার সহজ শর্তে অনুদান দেবে। এর জন্য ১৪৫ ধরনের ব্যবসা, উদ্যোগ চিহ্নিত করেছে সরকার, যা মহিলারা একক অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অধীনে করতে পারবেন।
রাজ্য সরকার নির্বাচিত মহিলাদের প্রথমে মাথাপিছু ভারতীয় মুদ্রায় ১০ হাজার প্রদান করবে। সেই অর্থ উপযুক্ত উদ্যোগে খরচ করা হলে পরবর্তী দুই দফায় ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ১২ হাজার করে দেওয়া হবে।
তবে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার অন্যতম শর্ত হিসাবে বলা হয়েছে সাধারণ ও ওবিসি ক্যাটিগরির মহিলাদের সন্তান সংখ্যা তিনের বেশি হওয়া চলবে না। অর্থাৎ চার বা তার বেশি সন্তানের মায়েরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের ক্ষেত্রে সন্তান সংখ্যার ঊর্ধ্বসীমা করা হয়েছে চার।
অসম সরকারের বক্তব্য, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উৎসাহী করে তুলতেই এই শর্ত আরোপ করা হয়েছে। যদিও বিরোধীদের মত, সন্তান সংখ্যার শর্ত চাপিয়ে দরিদ্র মহিলাদের সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা অনুচিত সিদ্ধান্ত।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বক্তব্য ভিন্ন। তিনি বলেছেন, তিন-চারটির বেশি সন্তানের মায়েরা কী করে ব্যবসা সামলাবেন। সন্তান লালন-পালনেই তাদের দিনের বেশি সময় ব্যয় করতে হয়।
সন্তান সংখ্যা ছাড়াও আরও দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে। বলা হয়েছে, পরিবারে কন্যা সন্তান থাকলে সেক্ষেত্রে দেখা হবে তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে কি না। স্কুলে ভর্তির বয়স হয়নি এমন কন্যা সন্তান থাকলে মা-কে হলফনামা দিতে হবে উপযুক্ত সময়ে মেয়েকে স্কুলে পাঠানো হবে।
বিজেপি অসমে ২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে। রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে এই ব্যাপারে বাড়তি প্রচার শুরু হয়।
মহিলাদের কর্মসংস্থানে সন্তান সংখ্যা নিয়ে শর্তের ক্ষেত্রে আলাদা করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। সাধারণ ক্যাটিগরির আওতায় বিবেচনা করে হবে সংখ্যালঘুদের। অর্থাৎ তাদেত ক্ষেত্রেও তিনটির বেশি সন্তান থাকা চলবে না।