ভারতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নতুন আইন নিয়ে কেন্দ্রকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের

ভারতের নির্বাচন কমিশন।

ভারতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সদ্য চালু হওয়া আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারির আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। নতুন আইনটি সংবিধান বিরোধী দাবি করে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিলেন মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস নেত্রী জয়া ঠাকুর।

সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত-র বেঞ্চ শুক্রবার ১২ জানুয়ারি প্রাথমিক শুনানি শেষে জানায় আইনটির উপর স্থগিতাদেশ জারি জরুরি বলে শীর্ষ আদালত মনে করে না। তবে মামলাকারীদের উত্থাপিত বিষয়গুলি নিয়ে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারে বক্তব্য জানতে আগ্রহী।

সেই মতো শুক্রবারই কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২০ এপ্রিল। এই সময়ের মধ্যে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পর্ব শুরু হয়ে যাবে।

গত বছর ২০২৩-এ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের নতুন বিধি সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

এই নতুন আইনে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটি। কমিটির বাকি দুই সদস্য হবেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত একজন অভিজ্ঞ মন্ত্রী।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে তিন সদস্যের কমিটি তৈরির সুপারিশ করেছিল। তাতে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা ছাড়াও শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে সদস্য করার কথা বলা হয়েছিল।

সেই রায় বাস্তবায়িত হয়নি। তার জায়গায় নতুন বিধি প্রণয়ন করে সংসদ বিল পাশ হয়েছে।

বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, নতুন আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারই শেষ কথা বলবে। এতে কমিশনের নিরপেক্ষতা বিঘ্নিত হবে।

কেন্দ্রের এই নতুন বিধিতে আরও একটি বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনাররা এতদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমমর্যাদা পেতেন। নতুন আইনে তাদের ক্যাবিনেট সচিবের সমমর্যাদা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরফলে কমিশনারদের পদমর্যাদার অবনমন ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।

এই সব বিষয়গুলির উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস নেত্রী জয়া ঠাকুর। তিনি দাবি করেন, আইনটি বাতিল করে দিক সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, শীর্ষ আদালতের সুপারিশকে উপেক্ষা করে নতুন আইন তৈরি হয়েছে। তাতে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগে নিরপেক্ষতা রক্ষার কোনও সুযোগ নেই।

জয়া ঠাকুর মামলাটি শুনানির জন্য সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনেরও আর্জি জানান। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই সব বিষয়ে আদালত কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য জেনে নিতে চায়। সেইজন্য কেন্দ্রকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।