ভারতে কোভিডের একটি নতুন স্ট্রেন ছড়াতে শুরু করেছে। দক্ষিণ ভারতের কেরলে ইতিমধ্যে তার সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এবারে কোভিড সংক্রমণ বিষয়ে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার ১১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ভিড়ের মধ্যে গেলে বা হাটে বাজারে গেলে মাস্ক পরুন। কারণ বাইরে থেকে অনেক মানুষ রাজ্যে আসেন। তাই বলছি ভয় না পেয়ে, আতঙ্ক না ছড়িয়ে, সাবধানতার জন্য মাস্ক পরুন।"
পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক সদর দপ্তর নবান্ন-এ সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "প্রাইভেট নার্সিংহোমগুলোকে আমি একটু সতর্ক করতে চাইছি। তারা যেন আইসিসিই-গুলোকে যথাসম্ভব সংক্রমণ মুক্ত রাখার চেষ্টা করেন। একটু সতর্ক থাকতে হবে, কারণ আবার নতুন করে কিছু কিছু জায়গায় কোভিডের নতুন ভার্সন দেখা যাচ্ছে। আমাদের এখানে কেরালাতে কিছু খবর সামনে এসেছে। করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন।"
পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "প্রাইভেট নার্সিংহোমগুলো থেকে কোভিডের নতুন স্ট্রেন ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্ক করছি। তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, আতঙ্ক ছড়ানোরও দরকার নেই। সবাইকে বলব যতটা পারবেন ততটা সতর্ক থাকুন। আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে যেমন সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। আমি আমার নিজের পরিবারের দুইজন সদস্যকে হারিয়েছি করোনার কারণে। সতর্কতা তাই এখন থেকেই নিতে হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে।"
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বলেন, "আমি শুধু সাবধান থাকার কথা বলছি। কারণ, অতীতেও দেখা গিয়েছে যাদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যাদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে তাদের কোভিডের সংক্রমণ থেকে ঝুঁকি থাকছে। সেই কারণেই সরকার সাবধান থাকার কথা বলছে।"
করোনার নতুন প্রজাতি নিয়ে অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও উদ্বেগ বেড়েছে। কলকাতা-সহ কয়েকটি জেলায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ উপপ্রজাতির খোঁজ মিলেছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
কিছুদিন আগে কলকাতায় ৬ মাসের এক শিশুর শরীরে করোনার নতুন উপরূপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে জেএন.১। শিশু ও বয়স্কদের বেশি সতর্কতা জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, পিরোলা অথবা BA.2.86-এর মিউটেশন-এর পরিবর্তিত রূপ হল জেএন.১। কোভিড ভ্যাকসিন এই প্রজাতির সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরতে হবে, হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা জরুরি, অসুস্থ হলে বা উপসর্গ দেখা দিলে আইসোলেশন-এ থাকতে হবে। টানা জ্বর, শ্বাসকষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে।