পাপুয়া নিউ গিনিতে দাঙ্গায় ১৫ জন নিহত হয় এবং ক্ষুব্ধ জনতা বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় ও দোকানে লুটপাট চালায়। এরপর বৃহস্পতিবার সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই “আইন লংঘনের ” বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এই দেশের সরকারের বিরুদ্ধে সৈন্য, পুলিশ কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের একটি দল বিক্ষোভ শুরু করার পর বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানী পোর্ট মোরসেবিতে সহিংসতার সূত্রপাত ঘটে।
কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই দাঙ্গা উত্তর দিকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লায় শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে বৃহস্পতিবার দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, এই তুমুল “আইন লংঘনকে” বরদাস্ত করা হবে না।”
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি আজ জনগণ ও দেশের সঙ্গে কথা বলতে চাই।”
তাঁর কথায়, “এই দেশ যতটা আমার আপনাদেরও ততটা। আইন ভঙ্গ করলে বিশেষ ফলাফল পাওয়া যায় না।”
পুলিশ কমিশনার ডেভিড ম্যানিং নিশ্চিত করেছেন যে, এই অস্থিরতায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে।
এএফপি-কে দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পোর্ট মোরসেবির বৃহত্তম হাসপাতালে ২৫ জনের চিকিৎসা চলছে যাদের দেহে গুলির ক্ষত রয়েছে। পাশাপাশি, ছয়জনকে “ছোট ছুরি” দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।
পোর্ট মোরসেবিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বলেছে, তাদের চত্বরের কাছে গুলি ছোঁড়া হয়েছিল কারণ পুলিশ “লুটকারীদের দলকে ছত্রভঙ্গ” করার চেষ্টা করেছিল।
পোর্ট মোরসেবিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বাইরে জনতার ছোট একটি দল সমবেত হয়েছিল আগে। তারা নিরাপত্তা গেটে ভাঙচুর চালায় এবং পার্ক করা পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
দাঙ্গাকারীরা চীনের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করেছিল বলে খবর আসায় পাপুয়া নিউ গিনি সরকারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে বেইজিং।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের দেশের দুই নাগরিক এই সহিংসতায় “সামান্য আহত” হয়েছে।
কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই বেতন আটকে দেওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনী পাপুয়া নিউ গিনির সংসদের ভিতর বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল।
সহিংসতার এই উত্থান সে দেশের মানুষের প্রায়-অস্থির জীবনকেই প্রকট করে তুলেছে। দেশটি দারিদ্র্য ও ব্যাপক মাত্রায় অপরাধমূলক ক্রিয়াকলাপে জর্জরিত এই দেশ।
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর প্রান্তের সীমান্ত থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত পাপুয়া নিউ গিনি মেলানেশিয়ার বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনবহুল জায়গা।