পর্যটন নিয়ে ভারত এবং মালদ্বীপের মধ্যে দ্বন্দ্ব

মালদ্বীপের ভিলিমালে দ্বীপের সমুদ্র সৈকত। ১৫ নভেম্বর, ২০২৩। ফাইল ছবি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে মালদ্বীপের মন্ত্রীদের অবমাননাকর মন্তব্য এবং তার জেরে ভারতীয়রা মালদ্বীপে বেড়াতে যাওয়া বয়কট করার আহ্বান জানানোর পর ভারত এবং মালদ্বীপের সুদৃশ্য সৈকতগুলো একটি দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

এমন এক সময়ে ঘটনাটি ঘটে যখন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর অধীনে দেশটিকে চীনের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়তে দেখা যাচ্ছে। মুইজ্জু নভেম্বরে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।

গত সপ্তাহে মোদী ভারতের লাক্ষাদ্বীপে গিয়ে সেখানকার আদিম সমুদ্র সৈকতের প্রশংস করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বনাম টুইটার)-এ সৈকতে বালির ওপর দিয়ে হাঁটা আর স্নরকেলিং করার ছবি পোস্ট করেন।

দ্বীপগুলো ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রতি বছর মাত্র কয়েক হাজার মানুষ এই দ্বীপগুলোতে ঘুরতে যায়। মোদী বলেছিলেন, “যারা নিজের মধ্যেকার দুঃসাহসী সত্তাকে আলিঙ্গন করতে চায়” তাদের তালিকায় ওই দ্বীপগুলো থাকা উচিত।

তিনি মালদ্বীপের কথা উল্লেখ করেননি। কিন্তু তার পোস্টগুলোকে ছোট্ট দেশটির কেউ কেউ দৃশ্যত ভারতীয় পর্যটকদেরকে মালদ্বীপের বিলাসবহুল রিসোর্ট থেকে লাক্ষাদ্বীপের স্বল্প পরিচিত সমুদ্র সৈকতে আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখেছে।

মালদ্বীপের একজন উপমন্ত্রী মরিয়ম শিউয়ানা মোদীকে ইঙ্গিত করে এক্স-এ লিখেছেন, “পুরোদস্তুর ক্লাউন”। তিনি তাকে “ইসরাইলের হাতের পুতুল” বলে অভিহিত করেছেন। অন্য দুজন মন্ত্রীও মোদীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।

পোস্টগুলো পরবর্তীতে মুছে ফেলা হয়, তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। মালদ্বীপ সরকারও তাদের মন্তব্যের সাথে একমত নন বলে জানিয়ে দেয়।

বলিউড তারকা এবং বিশিষ্ট ক্রিকেট খেলোয়াড়সহ বেশ কিছু সেলিব্রেটি একটি হ্যাশট্যাগ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট শেয়ার করেন- #ChaloLakshadweep; এর অর্থ হলো “চলো লাক্ষাদ্বীপে যাই।”

গত বছর মালদ্বীপের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সমুদ্র সৈকতে সর্বাধিক সংখ্যক দর্শনার্থী ছিল ভারতীয়, যা মোট পর্যটকদের ১১ শতাংশের বেশি। মালদ্বীপের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় এক চতুর্থাংশ পর্যটন খাত থেকে আসে। মালদ্বীপের ৫ লাখ জনসংখ্যার জন্য এই খাত অত্যাবশ্যক।

সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোদী সম্পর্কে মন্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানাতে নয়াদিল্লিতে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। ভারতের গণমাধ্যম একথা জানায়।