বিগত এক মাসের মধ্যে তিনবার, আবার কখনও চার দিনে দু'বার লাইনচ্যুত হয়েছে শুধু ভারত নয়, পৃথিবী বিখ্যাত পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিঙের টয়ট্রেন। এই ধরনের দুর্ঘটনা বারবার ঘটার কারণ সরিজমিনে এবার খতিয়ে দেখলেন ভারতীয় রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
দেশ, বিদেশের পর্যটকদের কাছে দার্জিলিঙের বিশেষ আকর্ষণ টয়ট্রেন। সাম্প্রতিককালে বারবার টয়ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় শুধু যে পর্যটকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন তাই নয়, প্রশ্নের মুখে পড়ছে রেলের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাও।
টয়ট্রেনের হেরিটেজ তকমা অক্ষুন্ন রাখতে মঙ্গলবার ৯ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল থেকে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের প্রতিটি খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন ভারতীয় রেলের আধিকারিকরা।
মঙ্গলবার দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সেকশন পরিদর্শন করেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। মঙ্গলবার সুকনা স্টেশন থেকে ঘুম পর্যন্ত লাইন পরিদর্শন করতে করতে দার্জিলিং পর্যন্ত যান তিনি। সেকশন পরিদর্শনের পরই ডিএইচআর কর্তাদের কাছে রিপোর্ট তলব করেন ডিআরএম। কেন বারবার লাইনচ্যুত হচ্ছে ট্রেন, ইঞ্জিনের কী পরিস্থিতি সবটাই জানতে চেয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, কার্শিয়াং, ঘুমের মতো বড় স্টেশনগুলিতে গিয়েছিলেন ভারতীয় রেলের আধিকারিকেরা। লাইনের পরিস্থিতি কী রয়েছে, কোথায় লাইন বদলাতে হবে, সেইসব বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে ডিএইচআর আধিকারিকদের ওই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাত্রী সুরক্ষায় আরও বেশি জোর দেওয়ার উপর। 'জয় রাইড'-এর জন্য বের করার আগে ট্রেনগুলিকে ভালো করে পরীক্ষা করেই ট্র্যাকে নামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানুয়ারি মাসের ন'দিন কেটেছে। এরই মধ্যে একাধিকবার লাইনচ্যুত হয়েছে টয়ট্রেন। এরমধ্যে তিনদিন দু'বার ঘুম রেল স্টেশনের কাছে একই জায়গায় লাইনচ্যুত হয়। এছাড়া কখনও টয়ট্রেনের যান্ত্রিক গোলযোগ, আবার কখনও ত্রুটির ঘটনা উঠে এসেছে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের নামিয়ে সড়কপথেও গন্তব্যে পাঠানো হয় একবার।
ফলে পর্যটকদের যেমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তেমনই টয়ট্রেনের হেরিটেজ তকমা ধরে রাখাও চ্যালেঞ্জের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই দ্রুত পদক্ষেপ নিল ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।