পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে ৬ পুলিশ সদস্য নিহত, ব্যাহত পোলিও কর্মসূচি

আফগান সীমান্ত থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের বাজাউর জেলায় রাস্তার পাশে বোমা বিস্ফোরণের পর এক আহত পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন প্যারামেডিকরা। ৮ জুন, ২০২৪।

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রশাসন সোমবার বলেছে, আফগান সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তার পাশে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ছয়জন পুলিশ নিহত ও প্রায় দুই ডজন মানুষ আহত হয়েছে।

এক সপ্তাহব্যাপী জাতীয় টিকাদান অভিযানের প্রথম দিনে পোলিও টীকা কর্মীদের রক্ষার্থে জঙ্গি-নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত জেলা বাজাউরে যাচ্ছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, এক জোরালো বিস্ফোরণে চুরমার হয়ে যায় পুলিশের গাড়ি।

উদ্ধারকর্মীদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। তারা বলেছে, “গুরুতর অবস্থায়” থাকা কয়েকজন আহত কর্মকর্তাকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই হামলার ফলে স্থানীয় প্রশাসন এই এলাকায় পোলিও টিকাদান কর্মসূচিকে বাতিল করেছে।

এই ভয়াবহ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। এই গোষ্ঠী সাধারণভাবে পাকিস্তানি তালিবান নামে পরিচিত। আফগান সীমান্ত ও সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীকে এরা সক্রিয়ভাবে নিশানা করে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, সোমবার শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে পাকিস্তানের ১৫৯টি জেলায় পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪.৪ কোটির বেশি শিশুর টিকাকরণ পরিচালনা করতে বাড়ি বাড়ি ঘুরবে পোলিও-প্রতিরোধী দল।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এখনও এমন দুই দেশ যেখানে মারাত্মক সংক্রামক পোলিও ভাইরাস শিশুদের বিকলাঙ্গ করে দেয়। তবে, ২০২৩ সালে দুই দেশের এই রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। উভয় দেশে মাত্র ৬টি এমন ঘটনার খবর মিলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) গত মাসে বলেছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, কিছু জেলায় নিরাপত্তার অভাব ও টিকাকরণ বর্জনের ফলে পোলিও দমন উদ্যোগ বাধা পাচ্ছে, বিশেষ করে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। বাজাউর এই প্রদেশেই অবস্থিত।

২০২৩ সালে পাকিস্তানের উল্লিখিত ছয়জন পোলিও রোগীর চারজনই ছিল এই প্রদেশের।