বিএনপির নতুন নির্বাচন দাবি, দুই দিনের গণসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ৮ জানুয়ারী, ২০২৪।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। রবিবারের ভোট এক তরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

এ সময়, বৈধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি নেতারা।

তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে, মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিনের গণসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, “দেশের জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন বর্জনের আহবান জানানো রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে আমরা দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাই।”

“বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি সত্ত্বেও, সরকার ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছে; বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান।

তিনি বলেন, “৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। যা ঘটেছে তা ভোট ডাকাতি ও ভোট কারচুপি।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, তাদের দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং তাদের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

“এর জন্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন, যা গতকাল (৭ জানুয়ারি) হয়নি। তাই জনগণ এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে;” যোগ করেন নজরুল ইসলাম খান।

“সবাই বলছেন যে ভোটার উপস্থিতি (ইসি) দেখিয়েছে তা ভুয়া;” বলেন তিনি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আন্দোলনে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক অবিলম্বে ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বাতিল, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন যে রাষ্ট্রের ওপর জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে হবে। একই সঙ্গে সব জোরপূর্বক গুম, হত্যা ও ভুতুড়ে মামলা বন্ধ করতে হবে এবং জনগণকে তার দমনমূলক শাসন থেকে রক্ষা করতে হবে।

“এগুলো এখন জনগণের দাবি। আমরা জনগণকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই যে, তারা বিভিন্ন চাপ ও প্রলোভনের মুখে ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং বিপুল সংখ্যক ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের অশুভ প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছেন;” বলেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।

ওবায়দুল কাদের: 'বিএনপিকে আরো ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে'

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির এখন পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি।

“দেশের জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে অগ্নিসংযোগকারী, ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ও ১৫ আগস্টের খুনিদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে;” বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত এবারও ব্যর্থ হয়েছে। বারবার নির্বাচন বর্জন করার পর এখন বিএনপির পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।

বিএনপি এখন যেসব অভিযোগ এনেছে তা অবাস্তব ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

বিএনপিকে সত্য মেনে নেয়ার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, “আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করেছি তা বাস্তবায়ন করবো।”

“এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে;” যোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ জনসভা করবে বলে জানান তিনি।