ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের বিস্তার রোধে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব সফরে ব্লিংকেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সপ্তাহব্যাপী সফরের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে পৌঁছেন। ৭ জানুয়ারি, ২০২৪।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি ইসরাইল সফরে যাবেন। তিনি গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রদান, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়া এবং সংঘাত যাতে অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে না পরে তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতা শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সাথে আলোচনায় ব্লিংকেন “সংঘাতের বিস্তার রোধ করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রগতির মাধ্যমে স্থায়ী আঞ্চলিক শান্তি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়েছেন।”

সৌদি আরবে ব্লিংকেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে বৈঠক করার কথা।

রবিবার জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সাথে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক ইসরাইলের হাতে গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রোধের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, গাজায় ক্ষুধার্থ ফিলিস্তিনিদের জন্য সরবরাহ করা মানবিক সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

কিন্তু তিন মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধ থামাতে আরবদের যুদ্ধবিরতির দাবি প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সমর্থন করা অব্যাহত রেখেছে।

ইসরাইল যতক্ষণ না মনে করে যে হামাসের ভবিষ্যতে হামলার হুমকি নির্মূল করা হয়েছে এবং গোষ্ঠীটি ভূমধ্যসাগরের পাশের সংকীর্ণ গাজা ভূখণ্ড আর নিয়ন্ত্রণ করবে না ততক্ষণ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা মনে করে যুদ্ধবিরতি কেবলই হামাসকে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুনরায় সংগঠিত হতে সক্ষম করবে।

আম্মানে অবস্থানকালে ব্লিংকেন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের একটি গুদামও পরিদর্শন করেছেন। ওই গুদাম থেকে গাজার জন্য ট্রাকে সহায়তা বোঝাই করা হয়।

ব্লিংকেনের সফর এমন এক সময়ে হয় যখন ইসরাইল-হামাস যুদ্ধকে গাজা ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য পশ্চিমা এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে।

৭ অক্টোবর হামাস জঙ্গিরা ইসরাইলের সীমান্ত অতিক্রম করে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ করে। ইসরাইল জানায়, এই হামলায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে। এরপরই ইসরাইল হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য তাদের সামরিক অভিযান শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ২২ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে। নিহতদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স এবং এপি থেকে নেয়া হয়েছে।