রাহুল গান্ধী: ভারত ন্যায় যাত্রায় জোর দেবেন জাতি গণনার উপর

ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

জানুয়ারি মাসে ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় অধ্যায়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের মণিপুর থেকে পশ্চিমের মহারাষ্ট্র পর্যন্ত ভারত ন্যায় যাত্রা শুরু করতে চলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

সামাজিক ন্যায় বা ধর্ম-বর্ণ-ভাষা নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের প্রতি সুবিচারের বার্তা দিতেই ন্যায় যাত্রা নাম রাখা হয়েছে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির এই কর্মসূচির।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী শুরু থেকেই ন্যায় যাত্রা নামের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে কাস্ট সেন্সাস বা জাতি গনণাকে মূল লক্ষ্য করেছেন। এই ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দিতেই 'ন্যায় যাত্রা' শব্দযুগল বেছে নিয়েছেন।

গত বছরের শেষে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য রাজস্থান, গুজরাট, মধ্য প্রদেশে কংগ্রেসের হারের পর দলের অনেক নেতা কাস্ট সেন্সাস-এর দাবির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, এতে উচ্চবর্ণের ভোট ব্যাঙ্ক হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলে তা স্পষ্ট। নিম্নবর্গের ভোটাররাও এই ইস্যুতে ভোট দেননি এমনটাই বলেন তারা।

কিন্তু রাহুল গান্ধী ভিন্ন মত পোষণ করেন। তার বক্তব্য, কাস্ট সেন্সাস-এর বিষয়টি বিধানসভা ভোটে দল একসুরে তুলে ধরেনি। তিনিই শুধু এই ব্যাপারে যা বলার বলেছেন।

রাহুল তার অবস্থানের সপক্ষে তিন রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের কৌশলকে হাতিয়ার করেন। তিনি বলেন, মধ্য প্রদেশে ওবিসি, ছত্তীসগড়ে আদিবাসী এবং রাজস্থানে ব্রাহ্মণ ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপি। এর অর্থ বিজেপিও জাতিগত বৈষম্যের সমস্যাকে এড়াতে পারছে না। কাস্ট সেন্সাস-এর দাবিকে তারাও অস্বীকার করতে পারছে না, মুখে তারা যাই বলুক না কেন।

কাস্ট সেন্সাস অর্থাৎ দেশের পশ্চাৎপদ অংশের মানুষের প্রকৃত সংখ্যা কত এবং তাদের আর্থ -সামাজিক অবস্থা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে তা জানতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজের রাজ্যে গত বছর এই গণনা করিয়েছেন।

এরপরেই কংগ্রেস ঘোষণা করে সরকার গড়ার সুযোগ পেলে দল গোটা দেশে কাস্ট সেন্সাস করাবে।

কংগ্রেসের এই নয়া ইস্যুর মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, "আমার চোখে দেশে পিছিয়ে থাকা কাস্ট চারটি—মহিলা, তরুণ, কৃষক ও শ্রমিক।" মোদী আরও বলেছেন, কাস্ট সেন্সাস-এর কথা বলে কংগ্রেস আসলে হিন্দু সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে।

রাহুল গান্ধী পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর জানিয়েছিলেন, একটি বা দুটি নির্বাচনের ফল দিয়ে কোনও ইস্যুর গুরুত্ব বিচার করা যায় না।

প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গত শুক্রবার ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার মহারাষ্ট্রের নাগপুরে কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় ভাষণে কাস্ট সেন্সাস-এর পক্ষে কথা বলেন। ‘হাঁ তৈয়ার হাম’ নামের জনসভায় রাহুল বলেন, "নির্বাচনে স্রেফ ক্ষমতা দখল নয়, ভারতে দুটি আদর্শের দীর্ঘস্থায়ী লড়াই চলছে।"