কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার বেশিরভাগ সমর্থকের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। রবিবার ব্যালটের জন্য মনোনয়ন বন্ধ হবার পর দলীয় কর্মকর্তারা একথা জানায়।
ইমরান খান গত আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী। বেশ কয়েকটি মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তাকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করতে বাধা দেয়ার জন্য মামলাগুলো সাজানো হয়েছে।
প্রাক্তন এই ক্রিকেট তারকাকে এই বছরের শুরুতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তবে একটি আদালত তার তিন বছরের সাজা স্থগিত করেছে এবং ঐ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে, কিন্তু পিটিআই গত সপ্তাহে ইমরান খানের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
পিটিআই-এর মুখপাত্র রওফ হাসান বলেছেন, “ইমরান খানসহ পিটিআই-এর প্রায় সকল জাতীয় ও প্রাদেশিক নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।” “আমাদের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ প্রার্থীর কাগজপত্র বাতিল করা হয়েছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি এএফপিকে বলেছেন, পাকিস্তানে একটি একক দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যাপক পদক্ষেপ ‘নজিরবিহীন।’
ইসিপি আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করার কথা।
পিটিআই-এর দাবী তাদেরকে ইতোমধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, সেহেতু তারা ইসিপি এবং বিভিন্ন আদালতে একাধিক আপিল করতে পারে।
২০১৮ সালে ক্ষমতায় তাকে সমর্থনকারী পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক নেতাদের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হবার পর ৭১ বছর বয়সী ইমরান খানকে গত বছর ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
এর বিরোধিতা করে তিনি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন এক প্রচারণা চালান। পাকিস্তানের ইতিহাসে সেনাবাহিনী বেশিরভাগ সময় ধরে দেশটি সরাসরি শাসন করেছে।
ইমরান খান অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট এনে তাকে অপসারণ করে এবং তার ওপর হত্যা প্রচেষ্টা চালায়। ওই প্রচেষ্টায় তিনি আহত হয়েছিলেন।
মে মাসে ইমরান খানকে স্বল্প সময়ের জন্য আটক করা হলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে এবং পিটিআই ব্যাপক আক্রমণের শিকার হয়। তাদের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের হয় জেলে পাঠনো হয়েছে নয়তো দল ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।