পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলছে আফগান সীমান্তের কাছে ৫ জন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত

পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যকার অভিন্ন ১,৫০০ মাইল সীমান্ত।

শনিবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি অস্থিতিশীল অঞ্চলে একটি ‘সন্ত্রাসী’ আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে এবং পরবর্তীতে বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন জঙ্গিকে হত্যা করেছে।

সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং এক বিবৃতিতে বলেছে, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের জঙ্গি হামলার শিকার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় রাতভর “গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক” অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার সাথে জড়িত একজন গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি কমান্ডারও নিহত হয়েছে।

সেনাবাহিনী গোষ্ঠীটির নাম জানায়নি, তবে রাষ্ট্রবিরোধী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি বলেছে, তাদের আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। তারা তাদের চারজন সদস্যের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো টিটিপির এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অভিযান চালানো সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে।

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কিছু অংশ মারাত্মক জঙ্গি হামলার সম্মুখীন হয়েছে। প্রধানত সৈন্য ও পুলিশকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। টিটিপি এই হামলার দায় স্বীকার করে। টিটিপিকে বেশিরভাগ সহিংসতার জন্য দায়ী করা হয়।

প্রাদেশিক সন্ত্রাস দমন বিভাগ শুক্রবার তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় জঙ্গি হামলায় এই বছর ১৮৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, একই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী ৩০০ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে এবং ৯০০ জনের বেশি মানুষকে বন্দী করেছে।

আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশেও এই বছর টিটিপি এবং জাতিগোষ্ঠীগত বেলুচ বিদ্রোহীদের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শত শত বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী শুধুমাত্র ২০২৩ সালে দেশব্যাপী জঙ্গি হামলা এবং বিদ্রোহ দমন অভিযানে তাদের প্রায় ৩০০ জন কর্মকর্তা ও সেনার মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছে। এই মাসের শুরুতে জঙ্গিরা একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় এবং পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন মানুষ নিহত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, টিটিপি এবং সহযোগী গোষ্ঠীগুলো আফগান অভয়ারণ্য থেকে সহিংসতার পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র টিটিপিকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

ইসলামাবাদ বলে আসছে, দুই বছর আগে আফগানিস্তানে ইসলামপন্থী তালিবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।