নেপালে বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্টঃ ভুলবশত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল

ফাইল ছবি-ইয়েতি এয়ারলাইন্স পরিচালিত একটি বিমান দুর্ঘটনার পর অকুস্থল থেকে এক নিহত ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করতে ব্যস্ত উদ্ধারকারী দল। পোখরা, নেপাল। ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩।

নেপাল সরকার নিযুক্ত একটি তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার এক রিপোর্টে জানিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে নেপালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের যে বিমান দুর্ঘটনায় ৭২ জন নিহত হয়েছিল, তাতে পাইলটরা ভুল করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় বিমানের এরোডায়নামিক ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

বেসরকারি সংস্থা ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন এটিআর৭২ বিমানটি ১৫ জানুয়ারিতে নেপালের পর্যটন নগরী পোখরায় অবতরণের ঠিক আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। ৩০ বছরে নেপালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলির মধ্যে এটি ছিল একটি।

দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই বিমানে দুই শিশু, চারজন ক্রু ও ১৫ জন বিদেশী নাগরিকসহ ৭২ জন লোক ছিল। কেউ বাঁচেনি।

বিমান প্রকৌশলী ও এই তদন্ত প্যানেলের সদস্য দীপক প্রসাদ বাস্তোলা বলেন, সচেতনতা ও আদর্শ পরিচালন পদ্ধতি অনুসরণের অভাবে পাইলটরা বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণে ফ্ল্যাপ লিভার ব্যবহার করেননি।

বাস্তোলা রয়টার্সকে বলেন, এর ফলে ইঞ্জিন “ঝিমিয়ে পড়ে এবং থ্রাস্ট তৈরি করতে পারেনি। তবে, এর গতির কারণে জমিতে আছড়ে পড়ার আগে ৪৯ সেকেন্ড পর্যন্ত উড়েছিল বিমানটি।

এটিআর ফ্রান্সে অবস্থিত এবং ওই বিমানের ইঞ্জিন তৈরি হয়েছিল কানাডায়। প্র্যাট অ্যান্ড হোয়াইটনি কানাডা নামক একটি সংস্থা প্রস্তুত করেছিল ইঞ্জিন।

১৯৯২ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এয়ারবাস এ৩০০ কাঠমাণ্ডু যাওয়ার পথে পার্বত্য এলাকায় ভেঙে পড়েছিল। সেই বিমানে থাকা ১৬৭ জনই নিহত হয়েছিল। সেই দুর্ঘটনার পর থেকে এটাই ছিল নেপালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা।

২০০০ সাল থেকে নেপালে বিমান বা হেলিকপ্টার ভেঙে প্রায় ৩৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এখানে আকস্মিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। প্রসঙ্গত, বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে এভারেস্টসহ আটটিই এই দেশে অবস্থিত।

নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কথা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সাল থেকে তাদের আকাশসীমায় নেপালি বিমানকে নিষিদ্ধ করেছে।