আইএইএ মঙ্গলবার জানিয়েছে ইরান এ বছরের শুরুতে যে হারে ইউরেনিয়াম পরিশোধন করতো সেই হারে পরিশোধন করা আবার শুরু করেছে । দেশটি তার পরমাণু কর্মসূচীর গতি আরো বাড়িয়ে তুলেছে যদিও বোমা তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করে চলেছে।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এক বিবৃতিতে বলেছে ইরান, “ অত্যন্ত উচ্চ মানের পরিশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে । যার ফলে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি নাগাদ যে পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের উৎপাদন কমিয়েছিল, ইরান এখন তার বিপরীত অবস্থানে চলে এসেছে”।
নভেম্বরের শেষ থেকে ইরান প্রতিমাসে প্রায় ৯ কিলোগ্রাম হারে পরিশোধিত ইউরোনিয়ামের উৎপাদন ৬০% বৃদ্ধি করেছে। তার মানে হচ্ছে জুন থেকে তা প্রায় ৩ কিলোগ্রাম বেশি হয়েছে । আইএইএ বলছে অতএব ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ইরান যেমন মাসে ৯ কিলোগ্রাম পরিশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতো এখন আবার সে পর্যায়ে ফিরে গেছে ইরান।
এতে বলা হয়েছে, “ ১৯ ও ২৪ ডিসেম্বর আইএইএ ‘র পরিদর্শকরা দুটি স্থাপনায় দেখেন পরিশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন এই হারে চলছে। এই ধরণের কার্যকলাপ যে দু’টি স্থাপনায় চলছে সেগুলি হলো, দ্য নাটানজ পাইলট ফিউয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট এবং দ্য ফরডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট।
পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজন হয় ৯০% পরিশোধিত ইউরেনিয়াম তবে পরমাণু বিদ্যূৎ কেন্দ্রের জন্য ৩.৬৭% ই যথেষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বিষয়ে যখন অনানুষ্ঠানিক আলোচনা আবার শুরু হয়েছে তখন মনে করা হচ্ছে ইরান ইউরেনিয়াম পরিশোধনের কাজ কমিয়ে দিয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুটি দেশের মধ্যে বৈরিতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে একে অপরকে অভিযুক্ত করছে।
এএফপি নভেম্বর মাসে আইএইএ’র একটি গোপন প্রতিবেদন দেখে যাতে এ রকম ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে ইরানের পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের পরিমাণ ২০১৫ সালের চুক্তিতে যে সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল তার ২২ গুণ বেশি । ঐ চুক্তিতে ইরানের পারমানবিক শক্তি সীমিত করার পরিবর্তে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা ছিল।
২০১৮ সালে এই চুক্তিটি ভেঙ্গে যায় যখন তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঐ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়।
তাঁর উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভিয়েনায় আলোচনায় ঐ চুক্তিটি আবার সক্রিয় করার চেষ্টা করেছিলেন তবে ২০২২ সালের গ্রীষ্মকাল থেকে এই প্রক্রিয়া থমকে আছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে ইরান সমর্থন করেছে এবং আইএইএকে আর পরমাণু কর্মসূচির স্থান পরিদর্শন করতে দেয়নি । সেখানে স্থাপিত নজরদারী ক্যামেরাও বিচ্ছিন্ন করেছে।