ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে তার দেশের যুদ্ধ আরও সম্প্রসারণ করার অঙ্গীকার করেছেন যখন, গাজায় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে এক উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরাইলি হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন।
'’সামনের দিনগুলিতে আমরা লড়াই সম্প্রসারিত করবো, এটা দীর্ঘ যুদ্ধ হবে এবং আমরা এর শেষ থেকে অনেক দূরে আছি,’’ নেতানিয়াহু সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) তার লিকুদ পার্টির সদ্যসদ্যের বলেন।
রবিবার থেকে সোমবার ইসরাইলি বাহিনী গাজার মধ্যাঞ্চলে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে। হামাস-পরিচালিত এলাকায় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, মাঘাযি উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৭০জন নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা মাঘাযিতে হামলার খবর পর্যালোচনা করে দেখছে। তারা হামাসকে নির্মূল করার যুদ্ধে বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে রাখার অঙ্গীকার পুনরায় ব্যক্ত করে।
বিভিন্ন খবরে জানা গেছে, বর্তমান সংঘাত বন্ধ করার জন্য মিশর নতুন একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবে আছে, যুদ্ধ বিরতি, পর্যায়ক্রমে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা আর পশ্চিম তীর শাসন করার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি ফিলিস্তিনি সরকার গঠন।
এই প্রস্তাব নিয়ে ইসরাইল বা হামাস থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া আসে নি।
ইসরাইলি সৈন্য নিহত
চলমান যুদ্ধে ইসরাইল তাদের আরও সৈন্য নিহত হবার খবর দিয়েছে, যেটা শুক্রবার থেকে মৃতের সংখ্যা ১৭তে উঠিয়েছে। গাজায় তাদের স্থল অভিযান শুরু করার পর থেকে ১৫৬ জন ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে তারা বলছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস রবিবার বলেছেন, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তিনি যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ডব্লিউএইচও ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত হাসপাতাল এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর ২৪৬টি আক্রমণ নথিভুক্ত করেছে। এসব আক্রমণে ৫৮২ জন নিহত এবং ৭৪৮ জন আহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরাইলের স্থল অভিযান এবং হাজার হাজার বিমান হামলা গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। হামলায় ২০ হাজার ৪শ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
হামাস ৭ অক্টোবর গাজা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে এবং ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ চালায়। ইসরাইল জানায়, এ আক্রমণে ১২০০ জন নিহত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্যরা হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। সাত অক্টোবরের হামলায় হামাস ইসরাইলের ২৪০ জন জিম্মিকে আটক করে। এদের মধ্যে ১২৯ জন এখনো গাজায় রয়ে গেছে।
এর জবাবে ইসরাইল হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করে এবং গাজায় বিমান,স্থল ও সমুদ্র আক্রমণ শুরু করে।
ইসরাইল হামাসের জনাকীর্ণ আবাসিক এলাকা ও টানেল ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে বলেছে, বেসামরিক মৃত্যুর উচ্চ সংখ্যার জন্য হামাস দায়ী।