ভারতের শীর্ষ আদালতে গত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে ১৩ হাজার বেশি মামলার নিষ্পত্তি

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

চলতি ২০২৩ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের তত্ত্বাবধানে দেশের শীর্ষ আদালতে ৫২ হাজার মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

বিগত বছরগুলিতে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে এক বছরে এত মামলা নিষ্পত্তির নজির নেই। গত বছর অর্থাৎ ২০২২-এর তুলনায় ২০২৩-এ ১৩ হাজার মামলার বেশি নিষ্পত্তি হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে এক বছরে ১৩ হাজার অতিরিক্ত মামলার নিষ্পত্তি করল সে বিষয়ে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় দু'টি উদ্যোগ নিয়েছেন।

মামলা দায়ের থেকে শুনানি পর্যন্ত আগে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় চলে যেত। প্রধান বিচারপতি সেই সময়সীমা কমিয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন করেছেন।

দ্বিতীয়ত, তিনি জামিনের মামলাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। জামিন মামলার দিনের পর দিন শুনানি হত না। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এই ব্যাপারে আদালতের ভাবনা, অভিমুখ বদলে দিয়েছেন।

সহকর্মী বিচারপতিদের তিনি বলেছেন, জামিন পাওয়া অভিযুক্তের অধিকারের মধ্যে পরে। কাওকে বিনা বিচারে জেলে আটকে রাখা যায় না।

এখন জামিনের মামলা দায়ের হওয়ার তিন দিনের মাথায় শুনানি করা হচ্ছে। আগে দীর্ঘ কয়েক মাস এই মামলাগুলি পড়ে থাকত।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানানো হয়েছে, নিষ্পত্তি হওয়া মামলার মধ্যে ১৩ হাজার আছে বকেয়া মামলা। তারপরও শীর্ষ আদালতে বকেয়া মামলার সংখ্যা এখন ৮০ হাজার।

প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, বকেয়া মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে চিন্তার বিষয় দেশের নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টগুলিতে জমে থাকা মামলা। এর সংখ্যা বর্তমানে ৫ কোটি। শীর্ষ আদালত নানা সময়ে উদ্যোগ নিয়েও এই মামলাগুলির নিষ্পত্তি করতে সফল হয়নি।

বিচারক, বিচারপতির অভাব এবং অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোই এই সমস্যার অন্যতম কারণ। তবে পুলিশ ও বিভিন্ন তদন্তকারী এজেন্সির তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতাও মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে বড় বাধা।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, চলতি বছরে সমলিঙ্গের বিয়ের অধিকার মামলা, কাশ্মীরে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত সাংবিধানিক মামলার নিষ্পত্তি করতে দীর্ঘ সময় গিয়েছে।

তারপরেও অতিরিক্ত ১৩ হাজার মামলার নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়োগের অনুমতি না দেওয়ায় শীর্ষ আদালতে যখন অনেক বিচারপতির পদ শূন্য পড়ে রয়েছে।