আফগানিস্তানে গণবিবাহ অনুষ্ঠান বাড়ছে

কাবুলে একটি গণবিবাহ অনুষ্ঠানে বিয়ের পাত্রদের দেখা যাচ্ছে। ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩।

আফগানিস্তানের রাজধানীতে সোমবার এক গণবিবাহ অনুষ্ঠানে ৫০টি যুগলের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই দরিদ্র দেশে ঐতিহ্যবাহী বিয়ের খরচ কমাতে এই পদ্ধতিতে বিয়ের চল এখন ঊর্ধ্বমুখী।

কাবুলে বিয়ের ঝলমলে হলগুলোর একটিতে সমবেত হয়েছিল যুগলরা, তবে অনুষ্ঠানে তেমন জাঁকজমক ছিল না।

২০২১ সালের আগস্ট মাসে তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পর থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান আড়ম্বর হারিয়েছে। নাচ ও গান কার্যকরীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কারণ শাসকরা এই ধরনের ক্রিয়াকলাপকে অ-ইসলামি বলে মনে করে।

বিমানবন্দরের কাছে সিটি স্টার বিবাহবাড়ির সামনে প্রায় একশো পুরুষ ঐতিহ্যবাহী শালওয়াড় কামিজ ও পাগড়ি পরে দলে দলে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে কোনও নারী উপস্থিত ছিল না।

১৮ বছর বয়সী রুহুল্লা রেয়াজি কয়েক ঘন্টার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়ার আগে এএফপিকে বলেন, একক বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজন করার মতো সামর্থ্য তার নেই।

তিনি জানান, “ঐতিহ্য মেনে একটা বিয়েতে আমাদের খরচ হত দুই লাখ থেকে আড়াই লাখ আফগানি (২৮০০-৩৬০০ ডলার), তবে এখন এই খরচ দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার আফগানি।”

এই তরুণ হাজারা শিয়া সংখ্যালঘু শ্রেণিভুক্ত। ঘোর প্রদেশের বাসিন্দা তিনি। খুচরো কাজ করে দৈনিক তার আয় মোটামুটি ৩৫০ আফগানি।

সেলাব ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজক। তারা প্রতিটি দম্পতিকে যে অর্থ দিয়েছে তা ১৬০০ ডলারের সমতুল্য যা বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশে একটা বড় অঙ্ক।

পুণ্যপ্রচার ও পাপ-প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ভাষণ দেন এবং কুরআন পাঠ করা হয়।

হবু বধূদের পৃথক জায়গায় দৃষ্টির আড়ালে রাখা হয়েছিল। সাংবাদিকদের তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি।

দুপুরের আহারের পরই পর্দানশীন নারীরা হাজির হয়।

সোমবারের এই গণবিবাহের জন্য ৬০০ যুগল আবেদন করেছিল।

এদের কারো কারো জন্য দিনটি ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান।

কাবুলের ২৩ বছর বয়ষ্ক কৃষক সামিউল্লাহ জামানি বলেন, "আমি তিন বছর ধরে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছি।"

তার হবু স্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমি তাকে দেখার জন্য অধীর হয়ে আছি।"