ভারতের সংসদের বড় অংশের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে দিল্লি পুলিশ বাদ

ভারতের সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্ব এখন থেকে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিইসফ-এর হাতে।

গত ১৩ ডিসেম্বর ভারতের সংসদে 'স্মোক বম্ব' ঘটনার পর ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে । সংসদে সরব হন বিরোধীরা।

এই ঘটনার এক সপ্তাহর মধ্যেই সংসদ ভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন করা হল। বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে সংসদ ভবন চত্বরের একটা বড় অংশের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দিল্লি পুলিশকে।

এখন থেকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হল সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স অর্থাৎ সিআইএসএফ জওয়ানদের।

সংসদ চত্বরে ঢোকার সময় ফ্রিস্কিং থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক বিষয় এবার সামলাবেন এই সশস্ত্র জওয়ানরা।

তবে কমপ্লেক্সের ভেতরের নিরাপত্তার দায়িত্ব এখনও লোকসভার সচিবালয়ের হাতেই থাকছে। ভবনের বাইরের অংশের সুরক্ষা ব্যবস্থা দেখার দায়িত্ব দিল্লি পুলিশের হাতেই রাখা হয়েছে।

সিআইএসএফ বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমানবন্দর, বিভিন্ন নিউক্লিয়ার ফেসিলিটি সহ ভারতের অন্তত সাড়ে তিনশ হাই প্রোফাইল জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এখন থেকে তার সঙ্গে যোগ হল সংসদ ভবনও।

গত ১৩ ডিসেম্বর বুধবার লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সংসদ কক্ষের ভেতরে দর্শকদের বসার গ্যালারি থেকে নিচে ঝাঁপ দেন দুই যুবক। তারপর জুতোর ভিতর থেকে স্মোক ক্যানিস্টার বের করে তা স্প্রে করে হলুদ ধোঁয়ায় ভরিয়ে দেন সংসদ চত্বর।

মহীশূরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার সুপারিশে সংসদে ভিতরে ঢুকতে পেরেছিলেন দুই যুবক।

দুজন যখন ভিতরে স্মোক বম্ব স্প্রে করছেন, সেই সময়ই তাদের আরও কয়েকজন বন্ধু ঠিক একইভাবে সংসদের বাইরেও স্মোক বম্ব স্প্রে করেন। স্লোগান দেন 'তানাশাহি নেহি চলেগা'।

অধিবেশন চলাকালীন এই ঘটনায় তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে লোকসভার অন্দরে। ১৩ ডিসেম্বর-ই ছিল ভারতের ২০০১ সালের সংসদ হামলার ঘটনার ২২ বছর পূর্তি।

তদন্তে উঠে আসে প্রাণ কিংবা সম্পত্তিহানি করার উদ্দেশ্য ছিল না হামলাকারীদের। মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষক সমস্যা সহ একাধিক ঘটনার প্রতিবাদেই সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলে তদন্তে দাবি করেন অভিযুক্তদের।

সেই ঘটনার পরেই মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। তারপর বুধবার ২০ ডিসেম্বর রাতে আটক করা হয়েছে কর্নাটকের বগলকোটের বাসিন্দা আরও এক যুবককে।