আফগানিস্তানে অস্ত্র ফেলে আসার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্র 'প্রহসন' বলে উড়িয়ে দিয়েছে

পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা পাকিস্তানের কোয়েটার উপকণ্ঠে আত্মঘাতী বোমা হামলার স্থানে একটি ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাক পরিদর্শন করছেন। ৩০ নভেম্বর, ২০২২। ফাইল ছবি।

যুক্তরাষ্ট্র আবারও ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের সময় দেশটিতে কোনো অস্ত্র রেখে আসার কথা অস্বীকার করেছে। তারা এই ধরনের অভিযোগকে “প্রহসন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আফগানভিত্তিক জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালানোর জন্য কীভাবে “অত্যাধুনিক অস্ত্র” পেয়েছে তা নিয়ে পাকিস্তান জাতিসংঘকে তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানায়। এর কয়েকদিন পর মঙ্গলবার কৌশলগত যোগাযোগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সমন্বয়কারী জন কার্বি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সময় তালিবান বিদ্রোহের অগ্রগতির মুখে অনেক আফগান সেনা যুদ্ধ না করার এবং তাদের অস্ত্র জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপির সাথে জড়িত জঙ্গিরা আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সেনা প্রত্যাহার এবং দুই বছর আগে তালিবান দেশটির ক্ষমতা দখল করার পর থেকে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য থেকে আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ জোরদার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে তাদের দুই দশক ব্যাপী উপস্থিতির সময় আট হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয়ে হাজার হাজার আফগান নিরাপত্তা সেনা তৈরি করেছে ও তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

গত বছর প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের এক প্রতিবেদনে দেয়া হিসাব অনুযায়ী বিদেশী সেনা প্রস্থানের কারণে বিদ্রোহী তালিবানের দেশব্যাপী আক্রমণের মুখে যখন সাবেক আফগান সরকার ভেঙে পড়ে তখন তাদের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নকৃত ৭১০ কোটি ডলারের সেনা সরঞ্জাম ছিল।

অস্ত্রগুলো জঙ্গিদের হাতে পড়েছে- এমন অভিযোগ তালিবান কর্তৃপক্ষ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, "সরঞ্জাম ও যানবাহনগুলো ডিপোতে গুদামজাত ও সংরক্ষণ করা হয় এবং কাউকেই অস্ত্র পাচার বা বিক্রি করার অনুমতি দেয়া হয় না।"

পাকিস্তান বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক মানুষসহ গত দুই বছরে দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় নিহতদের সংখ্যাও অন্তর্ভুক্ত। ওই হামলায় ২৩ জন সেনা নিহত হয়। এটি সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে সংঘটিত সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।