চীনের উত্তারঞ্চলে ভূমিকম্প, অন্তত ১২৬জন নিহত 

চীনের উত্তর-পশ্চিমে গানসু প্রদেশে ভূমিকম্পে গৃহহীন মানুষজন।

চীনের উত্তর-পশ্চিমে একটি পার্বত্য অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের রাতভর আঘাতে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচন্ড শীতের রাতে বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। দেশটির নয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই ভূমিকম্পে ১২৬ জন নিহত হয়েছেন।

চীনের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, সোমবার মধ্যরাতের ঠিক আগে ৬ দশমিক ২ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানলে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়। এতে বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত এবং গানসু ও কিংহাই প্রদেশে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

জরুরী কর্মীরা যখন ধসে পড়া ভবন এবং ভূমিধসে নিখোঁজদের সন্ধানে রাতভর অভিযান চালাচ্ছিল, তখন ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি হারানো লোকেরা তাড়াহুড়ো করে নির্মাণ করা তাঁবুতে শীতের রাত কাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, গানসু প্রদেশে ১১৩ জন নিহত এবং আরও ৫৩৬ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টির এক কর্মকর্তা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের উত্তরে অবস্থিত কিংহাইতে আরও ১৩ জন নিহত ও ১৮২ জন আহত হয়েছেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গানসুতে জরুরী কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ কর্মীর আবেদন করেছে। কিংহাইয়ের কর্মকর্তারা ভূমিধসে ২০ জন নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে গানসু প্রদেশের রাজধানী লানঝুসহ আশেপাশের বেশিরভাগ স্থানেই কম্পন অনুভূত হয়।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশে ২০১৪ সালের আগস্টে ভূমিকম্পে ৬১৭ জন নিহত হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যাটিও ছাড়িয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পটিই ছিল দেশটির সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প। সেসময় সিচুয়ান প্রদেশের প্রায় ৯০,০০০ মানুষ নিহত হয়, এবং স্কুলসহ কয়েকটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর থেকে আরও ভূমিকম্প নিরোধক উপকরণ দিয়ে শহরটি পুনর্নির্মাণের জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।