ইসরাইল হামাসঃ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘে নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে 

গাজা সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনী । এই ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩।

গাজা ভূখণ্ডে মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে এক প্রস্তাবে সোমবার ভোট হতে পারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে।

একই সময়ে। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইলের পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা কী, তা নিয়ে আলোচনা করতে ইসরাইল গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন ।

ইসরাইলের পৌঁছনোর পর অস্টিন এক্স-এ (সাবেক ট্যুইটার) বলেছেন, তিনি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠককে ব্যবহার করবেন “ইসরাইলের প্রতি আমেরিকার দৃঢ় অঙ্গীকার” পুনরায় জানানোর জন্য, এবং গাজায় ত্রাণ-সামগ্রীর সরবরাহ অব্যাহত রাখার পথ সুগম করার জন্য।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের খসড়া বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থা দেখেছে। এই খসড়ায় “নিরাপদ ও অবাধ মানবিক যোগাযোগের জন্য জরুরি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির” আহ্বান জানানো হয়েছে।

ট্রাক-ভর্তি ত্রাণ-সামগ্রী গাজায় পৌঁছাচ্ছে, এবং ত্রাণ সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে ইসরাইল আরও একটি ক্রসিং খুলে দিয়েছে। তবে, জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধের আগে গাজাতে দৈনিক ৫০০ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ করত, কিন্তু শনিবার মাত্র ১২১টি ত্রাণ-বোঝাই ট্রাক গাজা ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে, যে সংখ্যা অনেক কম।

এই মাসের শুরুর দিকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব ব্যর্থ হয় কারণ এই যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যুক্তি দিয়েছে, যুদ্ধবিরতি হামাসকে সুবিধা করে দেবে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অল্প সময় পরে অনুরূপ এক প্রস্তাবকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছিল, কিন্তু এই প্রস্তাবগুলি বাধ্যতামূলক নয়।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

ফ্রান্স, ব্রিটেন আর জার্মানির ডাক

রবিবার ইসরাইলে সফরকালে ফরাসি বিদেশ মন্ত্রী ক্যাথেরিন কলোনা আরও জিম্মির মুক্তির লক্ষ্যে, গাজায় বেশি পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশের জন্য ও “রাজনৈতিক সমাধান সূত্রে”র দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য “আশু যুদ্ধবিরতি”র আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমসে প্রকাশিত এক যুগ্ম নিবন্ধে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেরবকও গাজায় “টেকসই যুদ্ধবিরতি”র আহ্বান জানিয়েছেন।

তাঁরা লিখেছেন, “ইসরাইলের অভিযান যদি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে ফেলে, তাহলে ইসরাইল এই যুদ্ধে জয়ী হবে না।”

ইসরাইলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবরে হামাস ইসরাইলে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষ হত্যা করে এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করে নেয়। হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিওন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে।

গাজায় হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মত্রানালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা এবং স্থল অভিযানে ১৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।