ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার এক টিভি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইসরাইলি সৈন্যদের হাতে শুক্রবার তিনজন ইসরাইলি জিম্মি দুর্ঘটনাক্রমে হত্যার ঘটনা “আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে, পুরো জাতির হৃদয় ভেঙে দিয়েছে।”
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধকে অস্তিত্বের যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন নেতানিয়াহু বলেন, চাপ ও ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও বিজয় পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, গাজা ভূখন্ডকে অসামরিকীকরণ করে ইসরাইলি নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রানাধীন করা হবে।
‘’যতদিন না আমরা হামাসকে ধ্বংস করছি, যতদিন না সকল জিম্মিদের ফিরিয়ে আনছি, শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে আমরা বদ্ধপরিকর,’’ তিনি বলেন।
নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় সামরিক অভিযান নভেম্বরে আংশিক জিম্মি বিনিময় চুক্তি অর্জন করতে সাহায্য করেছে।
‘’আমাদের আলোচনাকারী দলকে আমি যে নির্দেশনা দিয়েছি, তা এই চাপের উপর ভিত্তি করেই দিয়েছি, যেটা ছাড়া আমাদের কিছুই নেই,’’ তিনি বলেন।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং ইসরাইল তাদের বিনিময়ের শর্ত মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আর কোনো জিম্মি মুক্তি দেয়া হবে না। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরাইল কখনোই এ ধরনের দাবি মেনে নেবে না।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, জিম্মিদের ভুলবশত হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে ইসরাইলি সৈন্যরা।
তারা যে কারো প্রতি হুমকি না, সেটা বোঝানোর জন্য তিনজন জিম্মি শুক্রবার সাদা পতাকা হাতে একটি ভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় ইসরাইলি বাহিনী।
হামাস, যাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিওন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, দাবি করেছে, এর আগেও অন্যান্য জিম্মিরা ইসরাইলি গুলি বা বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। যদিও এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দেয়নি তারা।
ইসরাইলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবরে হামাস ইসরাইলে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষ হত্যা করে এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করে নেয়। গাজায় হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মত্রানালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা এবং স্থল অভিযানে ১৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ভয়েস অফ আমেরিকার হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা অনিতা পাওয়েল এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন। এপি, এ এফপি এবং রয়টার্স থেকে এই প্রতিবেদনের জন্য কিছু তথ্য নেওয়া হয়েছে।