পাকিস্তান তালিবান টিটিপি’র বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চাইছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

ফাইল-তেহরিকে তালিবান পাকিস্তান(টিটিপি)’র সশস্ত্র জঙ্গিরা পাকিস্তানের একটি শিবিরে তাদের সমর্থনে লাহানো একটি পোস্টারের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। জুলাই ২১,২০০৮।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে সীমান্ত নিরাপত্তা থেকে সন্ত্রাস-বিরোধী কার্যক্রম নিয়ে আমেরিকান কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের মধ্যে বুধবার পেন্টাগনে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়্ । যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা সাম্প্রতিক আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।

ঐ বৈঠকের পরে পেন্টাগনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও এই কথাই বলা হয়েছে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান এমন এক সময়ে ওয়াশিংটন সফর করছেন যখন সে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পাখতুনখোয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আত্মঘাতী বোমা বর্ষণে ২৩ জন নিরাপত্তা কর্মী প্রাণ হারান।

ভয়েস অফ আমেরিকার দিওয়া বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তেহরিকে তালিবান পাকিস্তান(টিটিপি)।

পেশোয়ার ভিত্তিক বুদ্ধিজীবি এবং আফগানিস্তানের প্রতি পাকিস্তানের নীতিমালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ ইরফান আশরাফ, ভিওএ দিওয়াকে বলেন, “এই অঞ্চলে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান উভয়ই এ ধরণের সংগঠনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে যৌথ প্রচেষ্টা চালাতে বলছে”।

বুধবার লয়েড অস্টিন ও জেনারেল মুনিরের বৈঠকের আগে পেন্টগনের প্রেস সেক্রেটারি প্যট রাইডার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ পাকিস্তান ঐ অঞ্চলে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। আমরা অতি অবশ্যই তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছি বিশেষত সন্ত্রাসবিরোধী বিষয়গুলিতে।''

পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখওয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে ১২ ডিসেম্বের এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত সৈন্যদের একজনের মরদেহ বহন করছেন তাঁর সহকর্মী কয়েকজন।

সন্ত্রাস বিরোধী সংলাপ

একজন সাংবাদিক জানতে চান আফগানিস্তানে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ অবস্থান থাকায় যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে কি ধরণের সহায়তা দেবে এবং তাতে ড্রুোন হামলার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে কীনা । এই প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “ আমি তার বৈঠক সম্পর্কে সাধারণ ভাবে যা বলার তার চেয়ে বেশি কোন মন্তব্য করবো না।

''আমরা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করবো, এ বছর আমরা একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছি , এর আগে মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান সন্ত্রাস বিরোধী সংলাপ করেছে যাতে করে সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবিরোধী অর্থায়নের মতো জরুরি বিষয়ে সহযোগিতার কৌশল ঠিক করা যায়,'' ম্যাথিউ মিলার বলেন।

পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদান এখনও স্থগিত রয়েছে।

উইলসন সেন্টারের এশিয়া প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর মাইকেল কুগেলম্যান ভয়েস অফ আমেরিকার উর্দু বিভাগকে বলেন যে, নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা বিশেষত সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার বিষয়টিতে যদিও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, দুটি দেশের সামরিক সম্পর্কের একটা ঐতিহ্য রয়েছে যা অনেক সময়ে বিভিন্ন উত্তেজনার কারণে লক্ষ্য করা হয়না।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্কর্তাদের অন্যতম একটি লক্ষ্য হবে এই সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে তাদের ইচ্ছের কথা জেনারেল আসিম মুনিরকে জানানো।