পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনাকারীদের হস্তান্তর করতে তালিবানের ওপর চাপ

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান জেলার দারাবান শহরে জঙ্গিরা পাকিস্তানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়িতে আঘাত করার পর উদ্ধারকারীরা হামলাস্থলে দাঁড়িয়ে আছে। ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তান আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে দেশটির মাটিতে ঘাঁটি গাড়া সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায়। পাকিস্তান তাদের সামরিক ঘাঁটিতে এই সপ্তাহের মারাত্মক হামলার পরিকল্পনার জন্য দায়ী পলাতক জঙ্গি নেতাদের তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্যও তালিবানের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।

ইসলামাবাদে সাপ্তাহিক এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালোচ বলেছেন, “আমরা আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিটি লক্ষ্য করেছি, যেখানে বলা হয়েছে তারা ১২ ডিসেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত করবে।”

মঙ্গলবারের বন্দুক হামলা এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক হামলাগুলোর মধ্যে একটি। জঙ্গি-বিধ্বস্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ডেরা ইসমাইল খানে এই ঘটনা ঘটে। এতে ২৩ জন সেনা নিহত হয়েছে এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে।

একাধিক নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ছয়জন হামলাকারীর একটি দলের মধ্যে একজন আফগান আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিল। হামলাকারীরা সামরিক বেস ক্যাম্পে হামলা চালায় এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

সম্প্রতি আবির্ভূত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তান বা টিজেপি হামলার দায় স্বীকার করেছে। বালোচ বলেছেন, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপির সাথে টিজেপির “সংশ্লিষ্টতা” আছে। টিটিপি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। তারা আফগান মাটির অভয়ারণ্য থেকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, “আফগানিস্তানকে অবশ্যই এই জঘন্য হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং টিটিপি নেতৃত্বের সাথে তাদেরকে পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি, সন্ত্রাসী সত্তাদের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান মাটি ব্যবহার প্রতিরোধে আফগানিস্তান দৃঢ় এবং প্রমাণসাধ্য পদক্ষেপ নেবে।”

তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বুধবার আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, “তারা [পাকিস্তান] যদি তদন্ত চায় এবং আমাদের সাথে বিস্তারিত তথ্য ভাগ করে নেয় তাহলে অবশ্যই আমরা তদন্ত করবো।” তবে হামলার সাথে আফগানিস্তানের যোগসাজশ আছে-ইসলামাবাদের এমন অভিযোগ তিনি ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।