হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার আগ পর্যন্ত ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে বলে অঙ্গীকার করেছে। ইসরাইল-হামাসের চলমান যুদ্ধে ইসরাইলি সেনা একটি মারাত্মক সংঘর্ষের পর এই অঙ্গীকার করে। এমনকি যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান এবং ইসরাইলের নিকটতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের অস্বস্তির মুখোমুখি হবার পরেও ইসরাইল এ কথা বলছে।
গাজা সিটিতে অতর্কিত হামলা প্রমাণ করে, আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিমান ও স্থল যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে হামাস এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সক্ষম। হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে গত আড়াই মাস ধরে ইসরাইল এই আক্রমণ চালাচ্ছে।
ইসরাইল গাজার উত্তরাঞ্চলে সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে, এই অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে, এবং সেখানে বসবাসকারী বেশিরভাগ বাসিন্দাকে কয়েক সপ্তাহ আগে দক্ষিণে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
হামাসের প্রতিরোধ শক্তির কারণে ইসরাইল গাজাকে নিশ্চিহ্ন না করে হামাসকে পরাজিত করতে পারবে কি না সে প্রশ্ন উঠেছে। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাসের প্রতি সমর্থন বেড়েছে। এর একটি কারণ অনেক বেশি শক্তিশালী শত্রু ইসরাইলের বিরুদ্ধে জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের কঠোর প্রতিরোধ। অন্যদিকে ইসরাইলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গাজায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যু নিয়ে তাদের ক্রমবর্ধমান অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। গাজায় ইসরাইলের হামলা ইতোমধ্যে একুশ শতকের অন্যতম একটি ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের পরিণত হয়েছে।
বুধবার গভীর রাতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “হামাস নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবো, এর আগে থেমে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।” তিনি বলেন, “এমনকি প্রচণ্ড বেদনা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও আমি এটা বলছি। কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান বৃহস্পতিবার ইসরাইল সফরে যাবার কথা। যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আরও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসরাইলকে চাপ দিয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইসরাইল তার “নির্বিচার বোমা হামলার” কারণে আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাচ্ছে।
মঙ্গলবার গাজার ঘনবসতিপূর্ণ শিজাইয়াহ এলাকায় অতর্কিত হামলা চালানো হয়। ২০১৪ সালে ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধের সময় শিজাইয়াহতে বড় একটি সংঘর্ষ হয়েছিল। মঙ্গলবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে দুজন উচ্চপদস্থ অফিসার রয়েছে। ২৭ অক্টোবর গাজায় স্থল আক্রমণ শুরু হয়। এই আক্রমণে মোট ১১৬ জন ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।