নজিরবিহীন রায়ে এলজিবিটিকিউ+ নিয়ে সক্রিয়তাকে অবৈধ ঘোষণা করল রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট

মস্কোতে রুশ সুপ্রিম কোর্টে এক শুনানির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ওলেগ নেফেদভ। ৩০ নভেম্বর, ২০২৩।

রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এলজিবিটিকিউ+ নিয়ে সক্রিয়তাবাদকে কার্যত অবৈধ ঘোষণা করেছে। এই রায় দ্রুত রক্ষণশীল হয়ে ওঠা রাশিয়ায় সমকামী, লেসবিয়ান ও ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এক কঠোরতম পদক্ষেপ।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আদালতে দায়ের হওয়া এক মামলার কথা ঘোষণা করে এক বিবৃতিতে বিচার মন্ত্রক যুক্তি দিয়েছিল, রাশিয়ায় চলা এলজিবিটিকিউ+ “আন্দোলন”-এর “চরমপন্থী প্রকৃতির লক্ষণ ও প্রকাশ” চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বলা হয়েছিল, এই আন্দোলনে “সামাজিক ও ধর্মীয় বিরোধে উস্কানি দেওয়া হয়েছে।” যদিও কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বা প্রমাণ দেয়নি। আদালত তার রায়ে এই “আন্দোলন”-কে চরমপন্থী বলে ঘোষণা করেছে এবং রাশিয়ায় একে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই মামলার রুদ্ধদ্বার শুনানিতে কোনও বিবাদীকে রাখা হয়নি। বহু অধিকার কর্মী উল্লেখ করেছেন, এই মামলায় “আন্তর্জাতিক নাগরিক এলজিবিটি আন্দোলন”-কে নিশানা করা হয়েছে যার কার্যত অস্তিত্বই নেই; বরং এটি একটি ব্যাপক ও অস্পষ্ট ধারণা। এই “আন্দোলন” –এর সঙ্গে যুক্ত বলে বিবেচিত কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উপর দমনপীড়ন চালাতে রুশ কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করবে এই রায়।

রাশিয়ার এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের সঙ্গে কর্মরত মানবাধিকার আইনজীবী ম্যাক্স ওলেনিশেভ শুনানির আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, “বিচার মন্ত্রক অস্তিত্বহীন সংগঠন ‘আন্তর্জাতিক নাগরিক এলজিবিটি আন্দোলন’-কে চরমপন্থী হিসেবে তকমা দিতে চায়। কার্যত যা ঘটতে পারে তা হল, আদালতের এই রায় হাতে নিয়ে রাশিয়ায় সক্রিয় এলজিবিটিকিউ+ সংক্রান্ত উদ্যোগকে নাগরিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে রুশ কর্তৃপক্ষ রায়টিকে প্রয়োগ করবে।”

বেশ কয়েকজন এলজিবিটিকিউ+ সক্রিয় কর্মী জানিয়েছেন, এই মামলায় তারা একটা পক্ষ হতে চেয়েছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, এটি তাদের অধিকারের প্রশ্ন, কিন্তু আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়। এই মামলা নিয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে বিচার মন্ত্রক কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে আরও একটি আইন পাশ করে লিঙ্গ পরিবর্তন প্রক্রিয়া ও রূপান্তরকামীদের শারিরীক বদলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।