পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট রবিবার রাজধানীতে সেনাবাহিনীর প্রধান ও বৃহত্তম ব্যারাকে বন্দুকধারীদের হামলার পর দেশব্যাপী কারফিউ ঘোষণা করেছেন। ঐ অঞ্চলের দেশগুলোতে অভ্যুত্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় শৃংখলা ভেঙ্গে পড়ার আশংকা বেড়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো এক টুইটবার্তায়, অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের রাজধানী ফ্রিটাউনের উইলবারফোর্স ব্যারাকের ভেতরে অবস্থিত সামরিক অস্ত্রাগারে হামলার খবর জানান । তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হটিয়ে দিয়েছে এবং 'শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে'।
তিনি আরও বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত দল পলাতক বিদ্রোহীদের অবশিষ্ট অংশকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। তারা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। দেশব্যাপী ডাকা কারফিউয়ে নাগরিকদের ঘরে থাকার জন্য বলা হচ্ছে।”
দেশটির তথ্য ও শিক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি "নিয়ন্ত্রণে" রেখেছে। প্রায় ৮০ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম তারা। দেশটিতে সহিংসতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য আশংকা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, রাজধানীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে সরকার আশ্বাস দিলেও শহরে এখনো গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।
বন্দুকধারী বা হামলার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এই হামলার ঘটনা এমন সময় ঘটেছে যখন বিতর্কিত ভোটে বায়ো দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে প্রধান বিরোধীদল তার কয়েক মাস পরই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ এনেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ব্লক ইকোওয়াস এই ঘটনাকে “অস্ত্র সংগ্রহ এবং দেশের শান্তি ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার ষড়যন্ত্র” বলে বর্ণনা করেছে। সিয়েরা লিওন এই জোটের সদস্য।
সাম্প্রতিক মাসগুলিতে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় অভ্যুত্থান কমিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়েছে জোটটি। ২০২০ সাল থেকে আটটি সামরিক অধিগ্রহনের রেকর্ড করেছে তারা। এই বছর তালিকায় সর্বশেষ যোগ হয়েছে নিজার এবং গ্যাবন।
জোটটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, "অসাংবিধানিক সরকার পরিবর্তনে ইকোওয়াস তার জিরো টলারেন্স পুনর্ব্যক্ত করছে"।
সিয়েরা লিওনের ১১ বছরের নৃশংস গৃহযুদ্ধের অবসানের পর পঞ্চম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন বায়ো ।
গৃহযুদ্ধে দুই দশকের বেশি সময় ধরে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। দেশটির অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।
দুর্বল অর্থনীতির কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বায়োকে। দেশটির প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র, যুব বেকারত্বের হার পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যে সর্বোচ্চ।