আফগান নারীদের ইস্যুতে তালিবানের আত্মপক্ষ সমর্থন, বাইরের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান

জাতিসংঘের একটি শীর্ষ সম্মেলনের আগে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার বিরোধিতা করতে আফগান নারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে কাবুলে বিক্ষোভ মিছিল করে। ২৯ এপ্রিল, ২০২৩। ফাইল ছবি।

আফগানিস্তানের তালিবান সরকার জাতিসংঘকে বলেছে, তারা ধর্মীয় মূল্যবোধ বিবেচনা করবে এবং বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারা বাইরের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে।

বিবৃতিটি এই সপ্তাহে জাতিসংঘের কাছে নিরাপত্তা পরিষদের কমিশন করা মূল্যায়নের প্রতিক্রিয়া হিসেবে জমা দেয়া হয়েছিল। এতে তালিবান শাসনের অধীনে সংকট কবলিত আফগানিস্তানের সাথে মোকাবিলা করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক পদ্ধতির সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

দুই বছর আগে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার পর থেকে তালিবান আফগানিস্তান জুড়ে ষষ্ঠ শ্রেণির বেশি মেয়েদের স্কুলে যেতে নিষেধ করেছে। তারা জাতিসংঘসহ সরকারি কার্যালয় এবং সহায়তা সংস্থাগুলোতে আফগান নারীকর্মীদের কাজ করা থেকে বিরত রেখেছে।

কর্তৃপক্ষ বিউটি সেলুনগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে এবং কোনো পুরুষ অভিভাবক সাথে না থাকলে নারীদের বিনোদন কেন্দ্রে যেতে এবং রাস্তায় ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয় না।চ

জাতিসংঘ নির্দেশিত মূল্যায়নে বারবার আফগান নারীদের সংঘাত বিধ্বস্ত দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালনে স্বাধীনতা দেয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

এই মাসে নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেয়া মূল্যায়নে বলা হয়েছে, "আফগানিস্তানের বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থায় যেকোনো আনুষ্ঠানিক সম্পৃক্তকরণের জন্য আফগান নারীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের প্রয়োজন হবে।"

তালিবান জাতিসংঘের কিছু সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছে; যেমন, দেশটিকে তার অর্থনীতি শক্তিশালী করতে সহায়তা করা এবং আফগানিস্তানের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগকে উৎসাহিত করা। তবে তারা একটি আন্তঃআফগান সংলাপের ধারণা এবং দেশের নিরাপত্তা,অর্থনৈতিক এবং মানবিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান সরকারের সক্ষমতা সম্পর্কে সংশয়কে প্রত্যাখ্যান করেছে।

তালিবান বলছে, আফগান নারীরা তাদের মৌলিক অধিকারগুলোর কিছু সুরক্ষিত করেছে, সমস্ত বেসামরিক কর্মচারীর মধ্যে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী এবং নজিরবিহীন সংখ্যক নারী ব্যবসা, বাণিজ্য এবং উৎপাদন খাতে নেতা এবং চাকরি সৃষ্টিকারী হিসেবে কাজ করেন।

তালিবান আফগানিস্তান জুড়ে নিরাপত্তার উন্নতি এবং আফিম চাষ নির্মূল করার কৃতিত্ব নিয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উদ্ভূত একটি ভয়ানক মানবিক সংকট ২০২১ সালের আগস্টে তালিবানের দখলের পর থেকে আরও অবনতি হয়েছে। উল্লেখ্য, দেশের আনুমানিক ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষের দুই-তৃতীয়াংশের সহায়তার প্রয়োজন।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।